ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯১.৭৫ শতাংশই রোহিঙ্গা

কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯১.৭৫ শতাংশই রোহিঙ্গা

কক্সবাজার জেলায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৯১ দশমিক ৭৫ শতাংশ রোহিঙ্গা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত (১০ জুলাই) ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ১৩৪ জন। যার মধ্যে ১ হাজার ৯৫৮ জন রোহিঙ্গা ও ১৭৬ জন বাংলাদেশি। এই ৬ মাসের মধ্যে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চারজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। তবে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ গত বছরের তুলনায় নিম্নমুখি। কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ পংকজ পাল গত মঙ্গলবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজার সদর ও টেকনাফে নতুন করে পাঁচজন ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে বর্তমানে জেলার ৮টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছে ১২ জন।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যাবিদের দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২ হাজার ৭ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯০৫ জন রোহিঙ্গা ও ১০২ জন ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানীয় মানুষ। এর বাইরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালসহ ৮টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১২৭ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৭৪ জন স্থানীয় এবং ৫৩ জন রোহিঙ্গা। সর্বশেষ গত ২৩ জুন একজনের মৃত্যুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে এই ৬ মাসে। এরা সবাই রোহিঙ্গা।

আক্রান্ত বিবেচনায় ৫৭ শতাংশ পুরুষ ও ৪৩ শতাংশ নারী। এতে ০-৫ বছরের মধ্যে ৬ শতাংশ, ৬-১৮ বছরের মধ্যে ২১ শতাংশ, ১৯-৪০ বছরের মধ্যে ৬১ শতাংশ, ৪১-৬০ বছরের মধ্যে ১১ শতাংশ ও ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১ শতাংশ মানুষ পাওয়া গেছে। পরিসংখ্যানবিদ পংকজ পাল জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তের ক্ষেত্রে গত বছরের (২০২২) তুলনায় অনেক নিম্নমুখি বলা যাবে। ২০২২ সালে কক্সবাজারে মোট ১৯ হাজার ২৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। যার মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩৬ জন রোহিঙ্গা ও ৩ হাজার ৫৮৫ জন স্থানীয়। এই এক বছরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যার মধ্যে রোহিঙ্গা ২৬ জন ও স্থানীয় ১৩ জন।

এই নিম্নমুখিটা আরো ২ মাস পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এই কর্মকর্তা। তিনি জানান, আগামী আরো ২ মাস পরিসংখ্যান নিলে বোঝা সম্ভব হবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কক্সবাজার জেলায় কোন দিকে।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা জানান, সম্ভাব্য ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কক্সবাজারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে সদর হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো। একই সঙ্গে সচেতন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তার আশপাশের এলাকায় পরিচ্ছন্ন রাখা, জমানো পানি থাকলে তা পরিষ্কার করার কাজ চলছে।

তিনি জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত রোববার সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে সভায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ করেন। সভায় মশক নিধন কর্মসূচি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সচেতনতা বৃদ্ধি, পৌরসহ সব উপজেলা- ইউনিয়নে পরিচ্ছন্নতা অভিযান মনিটরিং, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত