ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উপকূল বায়ুবিদ্যুৎ

১.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব ডেনমার্কের

১.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব ডেনমার্কের

মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা অনুসারে, ডেনমার্কের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ফার্মসমূহ বাংলাদেশের উপকূল দূরবর্তী বঙ্গোপসাগরে ৫০০ মেগাওয়াট প্রাথমিক ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বাণিজ্যিক, ইউটিলিটি-স্কেল অফশোর উইন্ড প্রকল্প তৈরির জন্য বাংলাদেশের নিকট ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব জমা দিয়েছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ডেডিকেটেড গ্রিনফিল্ড নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিনিয়োগকারী সংস্থা- ‘কোপেনহেগেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার পার্টনারস’ (সিআইপি) এবং ‘কোপেনহেগেন অফশোর পার্টনারস’ (সিওপি) সম্প্রতি এই প্রস্তাবটি নিয়ে এসেছে।

গতকাল ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডেনমার্ক যেহেতু বায়ু বিদ্যুৎ শিল্পের বিকাশে অগ্রণী দেশ এবং এ বিষয়ে বৈশ্বিক নেতা, তাই এই প্রাথমিক বিনিয়োগ প্রস্তাব এবং তাদের অব্যাহত সহযোগিতা একটি সবুজ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে মূল চালিকাশক্তি হতে পারে। এই অফশোর উইন্ড প্রজেক্ট বিশেষ করে দেশের উপকূলীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা ‘ব্লু ইকনোমি’র উন্নয়নেও সহায়তা করবে। এই প্রস্তাবটি বাংলাদেশের জন্য এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে যখন, উচ্চাভিলাষী পরিচ্ছন্ন জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা সত্ত্বেও জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির উপর দেশ অনেক বেশি নির্ভরশীল। আর মুদ্রাস্ফীতিজনিত মূল্য বৃদ্ধির ধাক্কার এই সময়টাতে এ যেন এক কঠিন সিদ্ধান্ত। বিশ্বব্যাংকের মতে, অত্যন্ত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ৯ শতাংশের মতো কমে যেতে পারে। তাই বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে হবে, একই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতার জন্য আরো দক্ষ প্রযুক্তিতে প্রবেশ করতে হবে, যা কয়েক দশকের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করে। এছাড়া অস্থিতিশীল জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি থেকে দূরে সরে যেতে, কার্বন নির্গমন সীমিত করা এবং উচ্চ আয়ের মর্যাদা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য নির্মূল করার লক্ষ্যে দেশটির লক্ষ্য হওয়া উচিত।

ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকনোমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) গ্রিন ট্রানজিশনের জন্য বার্ষিক ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল প্রয়োজনীয়তার প্রাক্কালন করেছে। সিআইপি এবং সিওপি’র এই মাল্টিবিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবটি বিনিয়োগের একটি নতুন ঢেউ তৈরি করতে পারে। যা বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের জলবায়ুসমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে চালিত করতে পারবে।

জুনের প্রথম দিকে বাংলাদেশ ও ডেনমার্ক ‘২০২২ সাসটেইনেবল অ্যান্ড গ্রিন ফ্রেমওয়ার্ক এনগেজমেন্ট’-এর অধীনে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি ‘জয়েন্ট অ্যাকশন প্লান’ অনুমোদন করেছে। ডেনমার্কের ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এবং গ্লোবাল ক্লাইমেট পলিসি মন্ত্রী ড্যান জর্গেনসেনের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের সময় টেকসই উন্নয়নের জন্য সবুজ ও পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগ অংশীদারিত্বে সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই আরো বেশি ডেনিশ বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে সহজে ব্যবসা করার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ডেনমার্ক অন্যান্যের মধ্যে আরো নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সামুদ্রিক এবং নীল অর্থনীতির খাতে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একবার এটি বাস্তবায়িত হলে, এই অফশোর উইন্ড প্রজেক্টটি হবে- বাংলাদেশে এবং সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের প্রথম। প্রাথমিক সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, প্রকল্পের ৩০ বছরের কার্যমেয়াদে কয়েক ডজন স্থায়ী পদ ছাড়াও নির্মাণ পর্যায়ে শত শত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

সিআইপি এবং সিওপি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অবকাঠামো অপারেটর ও ডেভেলপার এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি) সামিট গ্রুপকে কনসোর্টিয়ামে যোগদানের জন্য প্রস্তাব করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত