বিএনপির ‘একদফা’ ঘোষণা

সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে ‘একদফা’ ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এই এক দফার ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির এক দফা ঘোষণা করছি। তিনি বলেন, এ দাবি আদায়ে আগামী ১৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হবে। একইভাবে এদিন সারা দেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একই কর্মসূচি করা হবে। এর পরদিন ১৯ জুলাই ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে বাহাদুরশাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি করা হবে। ফখরুল বলেন, এ কর্মসূচি ঘোষণা দিলাম। ওইদিন কর্মসূচি করার আগেই দাবি মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দেবেন, পদত্যাগ করে বিদায় নেবেন। যদি বিদায় না নেন, তারপর তো আরো কর্মসূচি আসছেই। কঠোর কর্মসূচি দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে জনগণ। বর্তমান সরকারের আমলে নেতাকর্মীদের খুন-গুম, মামলা-হামলার শিকার হতে হয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার শত শত মায়ের বুক খালি করেছে। সন্তানদের এতিম করেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে তিনি বলেন, চালের দাম এখন ৮০-৯০ টাকা। অথচ তারা (আওয়ামী লীগ) কথা দিয়েছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবেন। ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন। চাকরি ঠিকই দিয়েছে, সেটা তাদের নিজেদের লোকদের। যদিও তাদের কাছ থেকেও ১০ লাখ, ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ফখরুল বলেন, কৃষকদের কথা দিয়েছিল- বিনামূল্যে সার দেবে। সেই সারের দাম এখন তিন-চারগুণ বেড়েছে। মধ্যবিত্তদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অথচ মন্ত্রীরা বলেন, উন্নয়নশীল দেশে দাম তো বাড়বেই।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান প্রমুখ ।