ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনের আগে ‘উন্নয়ন’ চমক

নির্বাচনের আগে ‘উন্নয়ন’ চমক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটে অংশগ্রহণের জন্য নতুন নতুন ছক কষতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। সঙ্গে শুরু চলছে রাজনৈতিক তরজাও। নির্বাচনে অংশ নিতে এরইমধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টাপাল্টি একদফা দিয়েছে। বিএনপি চায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চায় প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সাংবিধানিক ধারায় নির্বাচন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখেই ভোটের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রচারে প্রাধান্য পাচ্ছে উন্নয়ন। নির্বাচনি বছরে শেষ বেলায় দেশবাসীকে মোটাদাগে চারটি উন্নয়ন প্রকল্প উপহার দিতে যাচ্ছে সরকার। নির্বাচনের আগে উন্নয়নের চমক ভোটের রাজনীতিতে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জানা গেছে, চলতি বছরের মধ্যে অন্তত আরো চারটি মেগা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বরে চালু হবে তিনটি আর অক্টোবরে খুলে দেওয়া হবে একটি। আসছে সেপ্টেম্বরে টানেলের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল সেপ্টেম্বরে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এটিই হবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম টানেল। এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পর্যটকসহ সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াত ব্যবস্থা আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে আগামী মাসে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেলসংযোগও চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এদিকে সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গত ৮ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিদর্শন শেষে তিনি একথা জানান। সে সময় ওবায়দুল কাদের বলছিলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও হয়ে ফার্মগেট র‌্যাম্প পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এই অংশটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

এছাড়া আসছে অক্টোবরে চালু হতে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের একাংশ। এ টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত লন্ডনের হিথ্রো, নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি, সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি, আরব আমিরাতের দুবাই বিমানবন্দরের আদলে। এ টার্মিনাল পুরোদমে চালু হলে এর মাধ্যমে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সংকেত বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চালু হবে পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ প্রকল্প। যার মাধ্যমে আরেকটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে বাঙালি জাতির।

সূত্র জানান, মেট্রোরেল লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল চালু হচ্ছে অক্টোবরে। এ অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। এছাড়া এ লাইন-৬ বর্ধিত অংশ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত চালু হবে আগামী বছর। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন রেলসেতুর কাজও প্রায় শেষ। বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত চলমান প্রকল্প বিআরটির এক প্রান্ত খুলে দেওয়া হবে যান চলাচলের জন্য। চলতি বছরের মধ্যে খুলছে বিআরটির অন্য অংশও। অন্যদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি খুলছে সেপ্টেম্বরে; যার মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের নানা সমালোচনা থাকলেও একই সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় উন্নয়ন তো কিছু হয়েছেই। তা তো অস্বীকার করা যায় না। এসব প্রকল্পের নির্বাচনি সুবিধাও নিতে চাইবে আওয়ামী লীগ।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ জনকল্যাণমুখী রাজনীতি করে। বাংলাদেশের সব সোনালি অর্জন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। শুধু কাঠামোগত উন্নয়ন নয়, নাগরিকদের জীবনমানের উন্নয়নেও কাজ করছে সরকার। আমরা আশা করি, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও উন্নয়নের পক্ষে-আওয়ামী লীগ সরকারে উপর পুনরায় ভরসা রাখবে দেশের জনগণ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত