ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সাগর

ডুবতে থাকা কনটেইনার জাহাজ উদ্ধার হয়নি

ডুবতে থাকা কনটেইনার জাহাজ উদ্ধার হয়নি

বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল থাকায় সন্দ্বীপ চ্যানেলে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে কাত হওয়া কনটেইনারবাহী জাহাজ ‘এমভি পানগাঁও এক্সপ্রেস’ উদ্ধার বিলম্বিত হচ্ছে। এরইমধ্যে ৯ দিন পার হয়ে গেছে। উদ্ধার বিঘ্নিত হওয়ায় জাহাজে থাকা মোট ৯৬ কনটেইনারের পণ্য উদ্ধার নিয়ে দেখা দিয়েছে হতাশা। এই কনটেইনারের পণ্যের মালিক অর্থাৎ আমদানিকারকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, কনটেইনার জাহাজটি উদ্ধার করে পণ্যগুলো অক্ষত অবস্থায় ইয়ার্ডে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উদ্ধারের মূল কাজটি করবে শিপিং অ্যাজেন্ট। তারপরও বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজটির উপর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণেই উদ্ধার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।

জানা গেছে, জাহাজটি তার আগের অবস্থানেই কাত হয়ে রয়েছে। তবে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সি গ্লোরি শিপিং এজেন্সির কর্মকর্তারা। জাহাজটিতে থাকা পণ্যের আমদানিকারকরা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে বারবার ধরনা দিচ্ছেন। তাগাদা দিচ্ছেন পণ্য উদ্ধারে। গত ৯ দিন সাগরে পণ্য আটকে থাকায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দুর্ঘটনার দিন জাহাজটির ১২ জন নাবিক ও বিআইডব্লিউটিএ’র দুজন প্রতিনিধিসহ ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। জাহাজটির মোট ৯৬টি পণ্যবাহী কনটেইনারের মধ্যে তিনটি পানিতে ভাসছিল। যার মধ্যে একটি নৌবাহিনী ও একটি কোস্ট গার্ড উদ্ধার করে।

চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’ জাহাজটি ভাড়ায় পরিচালনা করছে সি গ্লোরি শিপিং এজেন্সি। বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে জাহাজটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। জাহাজটির কিছু অংশ কাত হয়ে গত আট দিনে একই অবস্থানে পড়ে রয়েছে।

জানা গেছে, উত্তাল সাগরে জাহাজের আশপাশে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলটি এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় প্রতি বছরই ছোট ছোট জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ধরনের অনেক জাহাজ ডুবন্ত অবস্থায় রয়েছে। উদ্ধার করা যায়নি এখনো। বর্তমানে আবহাওয়া অধিদপ্তর তিন নম্বর সতর্ক সঙ্কেত ঘোষণা করেছে। এতে বন্দর বহির্নোঙরসহ সন্দ্বীপ চ্যানেলে সব ধরনের লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে কনটেইনার জাহাজটি উদ্ধার কাজ পুরোদমে শুরু হতে পারে বলে শিপিং অ্যাজেন্ট সূত্র জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, ৬ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভাসানচরের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে জাহাজটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্যের কনটেইনার নিয়ে কেরানীগঞ্জের পানগাঁও নৌ-টার্মিনালে যাচ্ছিল জাহাজটি। দুর্ঘটনার পর চার্টারারের নিযুক্ত একটি টেকনিক্যাল টিম (ডলফিন মেরিন) জাহাজের পানি ও কনটেইনার অপসারণের চেষ্টা করে।

এছাড়া বন্দরের টাগবোট কাণ্ডারী-১০সহ ভাড়া করা একটি টাগবোট দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হলেও উদ্ধারে সফল হয়নি। এখনো জাহাজটি উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। পরিচালনাকারী সি গ্লোরি শিপিং এজেন্সিকে জাহাজটি দ্রুত উদ্ধার করার জন্য চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে নৌ-বাণিজ্য অফিসের ইঞ্জিনিয়ার সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম ও বন্দরের সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোস্তাহিদুল ইসলামকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত