সুইজারল্যান্ডের প্রতি রাষ্ট্রপতি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান

প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে সুইজারল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সকালে বঙ্গভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো সিগফ্লাইড রেংগলি তার পরিচয়পত্র পেশকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপ্রধান রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন বলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান। নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সুইজারল্যান্ড সফরের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সাহাবুদ্দিন বলেন, উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে গত পাঁচ বছরে সুইজারল্যান্ড অব্যাহতভাবে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের বিদ্যমান এ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাণিজ্য বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিগত ৫০ বছরে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অব্যাহত সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনে দুদেশের সম্পর্ক বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত নতুন দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন। এর আগে রাষ্ট্রদূত বঙ্গভবনে পৌঁছলে পিজিআরের একটি অশ্বারোহী দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। এ সময় রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে অস্ট্রিয়াতে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তাকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।

দক্ষিণ কোরিয়াকে আরো বিনিয়োগের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশে বিরাজমান বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দক্ষিণ কোরিয়াকে আরো বিনিয়োগের আহ্বান জানান। গতকাল সকালে বঙ্গভবনে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার আবাসিক রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক তার পরিচয়পত্র পেশকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

পরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার এবং বাংলাদেশের ইপিজেডসহ বিভিন্ন খাতে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে যৌথ উদ্যোগ নিলে উভয় দেশই উপকৃত হবে। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের প্রশংসা করে রাষ্ট্র প্রধান বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেক দক্ষ কর্মী কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গভীরভাবে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে তিনি দুদেশের সরকারি-বেসরকারি খাতের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশের জনশক্তির দক্ষতার প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। রাষ্ট্রদূত এ সময় বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহ উদ্দিন ইসলাম এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।