ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল

খাবার নিয়ে পালাতে গিয়ে বাবুর্চি রোজিয়া নাতিসহ আটক

খাবার নিয়ে পালাতে গিয়ে বাবুর্চি রোজিয়া নাতিসহ আটক

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের রোগীদের খাবারের বরাদ্দকৃত চাল, ডাল, মাছ, আলু মাংসসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী দীর্ঘদিন ধরে চুরি করত বলে অভিযোগ ছিল সবাইর কাছে। চুরির বিষয়টি সবার মুখে মুখে জানা থাকলেও ধরা পড়েনি চোরচক্র। চাঁদপুর জেলা ছাড়া ও আশপাশের শরীয়তপুর, ফরিদপুর, লক্ষ্মীপুর জেলার অনেক রোগীই চিকিৎসা নিতে আসেন এ হাসপাতালে। আর ভর্তি হওয়া রোগীদের খাবার পরিবেশন করা হয় ঠিকাদারের মাধ্যমে। রোগীদের প্রতিদিনের বরাদ্দের খাদ্য থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন হাসপাতালের সহকারী বাবুর্চি রোজিয়া বেগম ও তার নাতি শাকিল। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলার সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন বাদী নির্ধারণের জন্য আলাপ আলোচনা চলছে। তার পরই একটি মামলা দায়ের করা হবে।।

গত বৃহস্পতিবার শেষ বিকালে হাসপাতালের পূর্ব দিকের পেছনের গেটে মাছ, চাল ও আলু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীদের হাতে আটক হন তারা। এ সময় নাতি শাকিলকে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে মারধরও করেন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে আসা চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহরিন এসে সহকারী বাবুর্চি রোজিনা বেগম ও শাকিলকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। স্থানীয়রা জানান, বিকালে হাসপাতালের পূর্ব দিকের গেট দিয়ে রান্নাঘর থেকে বাবুর্চির সহকারী রোজিয়া বেগম ও তার নাতি শাকিল বস্তায় করে প্রায় ১০ কেজি রুই মাছ, ২০ কেজি চাল, প্রায় ১০ কেজি আলু ও পাউরুটিসহ রোগীদের বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী অন্যত্র বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সচালক কাউসার, বাবু ও রাজ্জাকসহ কয়েকজন তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে তাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নেওয়া হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে রোজিনা বেগম ও নাতি শাকিল বলেন, রোগীদের খাবার চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করার সঙ্গে ঠিকাদারের লোক সঞ্জিব জড়িত। এ বিষয়ে ঠিকাদার আলমগীর ভুঁইয়ার লোক সঞ্জিব পোদ্দার বলেন, আমরা নিয়মিত রোগীদের ভালো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। হাসপাতালের রোগীরা যাতে ভালো এবং পরিপূর্ণ খাবার পান, সেটা আমরাও চাই। কিন্তু চুরির কারণে হয়তো রোগীরা সঠিক খাবার থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। যার কারণে আমাদের ঠিকাদারদের অনেক বদনাম রটে। আমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের এমন খাবার চুরি করার অভিযোগ পেয়েছি। আমি তাদের অনেক সতর্ক করেছি। আমি তাদের কঠিন শাস্তি চাই।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবু, অ্যাম্বুলেন্সচালক কাউসার ও রাজ্জাক বলেন, আমরা জেনেছি, রোজিয়া ও তার নাতি প্রায় প্রতিদিনই এভাবে রোগীদের মাছ, মাংস, চাল, ডালসহ বিভিন্ন খাবারসামগ্রী চুরি করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ও হোটেলে বিক্রি করে থাকেন। তাই আমরা তাদের দীর্ঘদিন পাহারা দিয়েছি। বিকালে চুরির মালগুলো অটোরিকশায় তোলার সময় তাদের হাতেনাতে আটক করি। এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার আসিবুল আহসান আশিব চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেব। এমনকি ভবিষ্যতে যেন আর এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য তাদের কাউকেই রান্না ঘরে চাকরিতে রাখব না। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত