আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজবাউদ্দীন আহমেদ, আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহী।

১১তম সমাবর্তনে স্প্রিং-২০১৭, ফল-২০১৭ এবং স্প্রিং-২০১৮ সেমিস্টারের স্নাতক ও স্নাতোকত্তর মোট ২ হাজার ২৩৮ শিক্ষর্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। স্প্রিং-২০১৭ সেমিস্টারের নাইম হাসান, ফল-২০১৭ সেমিস্টারের মো. শেখ আবরার কবির ও স্প্রিং-২০১৮ সেমিস্টারের জি. এম. শাহরিয়ারকে খান বাহাদুর আহছানউল্লা পদক দেওয়া হয়।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির পূর্বশর্ত শিক্ষা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রণীত ডিজিটাল বাংলাদেশ ও উন্নত, সমৃদ্ধ, সুখী, শান্তিময় বাংলাদেশ বিনির্মাণে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কাজ করছে বর্তমান সরকার।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সমাবর্তনের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনের একটি পর্যায় অতিক্রম করা হয়েছে। সামনে কর্মজীবনের দরজায় কড়া নাড়ছে। কেউ কেউ উচ্চতর শিক্ষার দিকে পা বাড়াবে। জীবনের এক বিশাল কর্মযজ্ঞ সামনের দিকে প্রতিক্ষায় রয়েছে। শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা অর্জন- এসব কোনো বয়সের গ-িতে আবদ্ধ থাকে না। মানুষকে জীবনব্যাপী শিক্ষা অর্জন করতে হয়। দীপু মনি অরো বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতিতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) শতকারা ৪ শতাংশ বিনিয়োগ করার কথা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আমরা সেখানে এখন পর্যন্ত শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে জিডিপির শতকরা ৩ শতাংশের বেশি উন্নীত করতে পারিনি। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে জিডিপির শতকরা ৬ শতাংশে উন্নীত করতে চায়। কারিগরি, কৃষি ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, আধুনিক বিশ্বের গুণগত শিক্ষার ব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর ও সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. মেজবাউদ্দীন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল আলম বলেন, শিক্ষা মানুষের মেধা ও মননকে বিকশিত করে। তবে দেশ ও জাতিকে উন্নয়নের শীর্ষে আরোহণ করতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখে, নিজ পরিবার, সমাজ ও দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ন্যায়পরায়ণতা ও সততার মাধ্যমে কাজ করবে। নিজ পরিবারের মাতা-পিতার অপরিসীম ভালোবাসা ও অশেষ সহায়তার কোনো প্রতিদানই যথেষ্ট নয়, তবে কৃতজ্ঞতা ভরে সারা জীবন স্মরণ রেখে তাদের প্রতি সর্ব উপায়ে সদ আচরণের যেনো কোনো ঘাটতি না থাকে। স্নাতক অর্থ এই নয়, জ্ঞান লাভ করার চেষ্টার সমাপ্তি। জ্ঞান লাভের সময়কাল দোলনা হতে মৃত্যুর পর্যন্ত। সদা পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে নতুন বিজ্ঞান, প্রকৌশলভিত্তিক জ্ঞানের উন্নয়ন না হলে বিশ্ব সমাজ হতে ছিটকে পড়তে হবে। তাই তোমাদের থাকতে হবে সদা প্রস্তুত, যাতে বিশ্বের প্রথম কাতারে বাংলাদেশ দাঁড়াতে পারে তোমাদের জ্ঞান, মেধার কারণে এবং পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের দৃঢ় প্রত্যয়ে। সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু তৈয়ব আবু আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, সিন্ডিকেটের সদস্যবৃন্দ, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার (ইনচার্জ) প্রফেসর ড. মো. হামিদুর রহমান খান ও বিভাগীয় প্রধানরা।