আজ পবিত্র আশুরা

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ শনিবার ১০ মহররম। পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয় মুসলিম বিশ্বে। হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্ব মুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। কারবালার এ শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটি। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এ দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।

এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, পবিত্র আশুরার মহান শিক্ষা আমাদের সবার জীবনে প্রতিফলিত হোক। তিনি বলেন, ‘কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মৃতিতে ভাস্বর পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী আমাদের অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করে, প্রেরণা জোগায় সত্য ও সুন্দরের পথে চলার। পবিত্র আশুরার মহান শিক্ষা আমাদের সবার জীবনে প্রতিফলিত হোক- এ প্রত্যাশা করি।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে আমি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.)সহ কারবালা প্রান্তরে শাহাদতবরণকারী সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’ তিনি বলেন, পবিত্র আশুরা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য এক তাৎপর্যময় ও শোকের দিন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম হজরত ইমাম হোসেন (রা.), তাঁর পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ সহচরবৃন্দ বিশ্বাসঘাতক ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে কারবালার প্রান্তরে শহীদ হন। ইসলামের সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য তাঁদের এ আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরদিন সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম। সব ধর্মই হানাহানি, হিংসা, বিদ্বেষ বা বিভেদ ভুলে মানুষকে শান্তির পথে আহ্বান করে। পবিত্র আশুরার এই দিনে আমি সাম্য, ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আসুন পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নেয়ার মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলা তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র আশুরা অত্যন্ত শোকাবহ, তাৎপর্যপূর্ণ মহিমান্বিত একটি দিন। বিভিন্ন কারণে দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, পবিত্র ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের পর আবার ডেঙ্গু মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আমাদের সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা জনগণকে সব সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। আল্লাহ বিপদে মানুষের ধৈর্য পরীক্ষা করেন। এসময় সবাইকে অসীম ধৈর্য নিয়ে সহনশীল ও সহানুভূতিশীল মনে একে অপরকে সাহায্য করে যেতে হবে।

ডেঙ্গু সচেতনতার পাশাপাশি তিনি এই মহামারিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র আশুরা পালন করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আল্লাহতায়ালার দরবারে বিশেষ দোয়া করি যেন, এই সংক্রমণ থেকে সবাই দ্রুত মুক্তি পাই। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।’