ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আগুন সন্ত্রাস সম্পর্কে সবাই সতর্ক থাকুন

আগুন সন্ত্রাস সম্পর্কে সবাই সতর্ক থাকুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের নামে দেশে ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি যাতে কেউ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে কেউ ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করে বাংলাদেশের ক্ষতি করতে না পারে।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে পঞ্চম ধাপে ৮টি বিভাগের ৩৪টি জেলায় আরো ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী নতুনগুলোসহ এ পর্যন্ত সারা দেশে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মান ৫৬৪টির মধ্যে ২৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন। গত শনিবার বেশ কয়েকটি বাসে বিএনপির অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের চরিত্র আপনারা ভালো করেই জানেন, এরা সন্ত্রাসী। গত শনিবারও তারা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে। তারা ২০১৩-১৪ সালেও চলন্ত বাস, ট্রেন ও লঞ্চে আগুন দিয়ে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ গত শনিবার তাদের (বিএনপি) ভয়ংকর চেহারা দেখেছে, কারণ তারা আবারও আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) ইসলামের নামে রাজনীতি করেছে, কিন্তু ইসলামের প্রতি তাদের ভালোবাসা নেই। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তাদের কোনো অবদানও নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং তাবলিগ জামাতের জন্য টঙ্গীতে এক টুকরো জমি বরাদ্দ করে সারা দেশে ইসলামের সত্য বাণী ছড়িয়ে দেয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবে হজের পর টঙ্গীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ করার জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও অর্জন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসী যাতে স্বল্প খরচে সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে পারে, সেজন্য বঙ্গবন্ধু হিজবুল বাহার জাহাজ কিনেছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতির পিতার আন্তরিক উদ্যোগে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সদস্যপদ লাভ করে।

তিনি আরো বলেন, তার সরকার সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করে সমাজে ইসলামের প্রকৃত চেতনা ছড়িয়ে দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি জেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস স্থাপন এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী আলেম-ওলামা, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের নামাজের সময় মসজিদে বিশেষ করে জুমার নামাজের সময় সামাজিক হুমকি সম্পর্কে ওয়াজ করতে বলেন যেন যুবকরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি এবং অন্যান্য অভিশাপ থেকে দূরে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘আলেম-ওলামাদের এমনভাবে ওয়াজ করা উচিত যাতে যুবকরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদকের সঙ্গে জড়িত না হয়’। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা (আলেম-ওলামা) শুক্রবার জুম্মার খুতবায় মানুষকে সচেতন করলে অভিভাবক, পিতামাতা ও শিক্ষক-সবাই আরো সচেতন হবেন, যাতে তাদের সন্তানরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং অন্যান্য অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে না পারে।’

বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি সবাইকে এর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে এবং সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।

ইসলামকে শান্তির ধর্ম আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে সহনশীল ধর্ম।

তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, কিন্তু জঙ্গিবাদের মাধ্যমে এর সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ‘কিছু লোকের জন্য আমাদের পবিত্র ধর্ম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। মডেল মসজিদ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ যাতে ইসলামের মর্মবাণী বুঝতে ও অনুধাবন করতে পারে, তার জন্য সরকার মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে।

তিনি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মধ্যে অনলাইন নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘মসজিদগুলো সরাসরি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে চালানো উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই মসজিদগুলোর ক্ষতি করতে না পারে।’

বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব নেই, যদিও জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে।’

দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক বৃক্ষরোপণ প্রয়োজন হওয়ায় তিনি সবাইকে অন্তত তিনটি গাছ লাগাতে বলেন- একটি ফল, একটি কাঠ এবং একটি ভেষজ চারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত