রাজধানীতে আলোচনাসভায় বিশেজ্ঞরা

মৃত্যুতে ম্যালেরিয়া-টিবিকেও ছাড়াতে পাড়ে হেপাটাইটিস-বি

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাপী যখন সংক্রামক ব্যাধিজনিত মৃত্যুর হার ক্রমাগত নিম্নমুখী, তখন হেপাটাইটিস বি’র ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ এর উল্টো চিত্র ফুটে উঠছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে ম্যালেরিয়া এবং টিবি রোগে মৃত্যুর সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাবে হেপাটাইটিস-বি জনিত নানা জটিলতায় মৃত্যুবরণকারী মানুষের সংখ্যা। এ অবস্থায় এসডিজি গোল বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস-বি এবং সি ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম আরো জোরদার করার পরামর্শ তাদের। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন এবং হেপাটোলজি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব তথ্য জানান। বক্তারা বলেন, পৃথিবীতে হেপাটাইটিস-বি এবং সি ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রমকে জোরদার করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী ২৮ জুলাইকে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

তবে শুধু সচেতনতাই নয়, পাশাপাশি লিভার রোগীদের সুলভে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়টিও ক্রমেই অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠছে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। এসময় তিনি ডিভিশনটির গত ২ বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে জানান, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনে এরই মধ্যে লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবলেশন, ট্রান্সআর্টারিয়াল কেমোএম্বোলাইজেশন এবং ইমিউনথেরাপির মতো অত্যাধুনিক সব চিকিৎসা সেবা উপলব্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি লিভার সিরোসিস রোগীদের চিকিৎসায় চালু করা হয়েছে হেপাটিক ভেনাস প্রেসার মেটিয়েন্ট, অটোলোগাস হেমোপয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বা স্টেম সেল থেরাপি, মুজিব প্রটোকল বা প্লাজমা এক্সেচেঞ্জ, লিভার ডায়ালাইসিস বা হেমোফিলটেশন। এছাড়া ট্রান্সলেশনাল মেডিসিনের গবেষণাতেও ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণার ওপর তার প্রশাসন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ সময় তিনি ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রোটারি মুভমেন্টের আরো ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের একাধিক সংস্থা যদি একত্রে কাজ করে তবে দেশের উন্নয়ন হবে। ইপিআই কর্মসূচি প্রথম চালু করেছিল রোটারিরা। সেই কর্মসূচি ধরে দেশ আজ পোলিওমুক্ত। রোটারি ক্লাবসহ দেশের সব সংস্থাকে নিয়ে আমরা শুধু হেপাটাইটিস না, অনেক বিষয়ে এক সঙ্গে কাজ করব। রোটারি ক্লাব বছরে এক লাখ স্ক্রিনিং করতে চায় এবং তারা এ রোগ প্রতিরোধে বছরে ১০ হাজার ভ্যাক্সিন দিতে চায়, আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম ভাইরাল হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে সরকারের কর্মপরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন এবং সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও রোটারি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথা জানান।