ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশ ফের আগুন সন্ত্রাসের পথে

বিএনপিকে রুখতে মাঠে আ.লীগ
দেশ ফের আগুন সন্ত্রাসের পথে

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মসূচি দিচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। তবে প্রথম দিকে বিএনপির আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও সম্প্রতি তারা আন্দোলনের মাঠে মারমুখি হচ্ছে। এদিকে বিএনপিকে রুখতে রাজনৈতিক মাঠে আওয়ামী লীগ শক্ত অবস্থানে গিয়েছে। বিএনপি বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেভাবে আগুন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল এবারও দ্বাদশ নির্বাচন সামনে রেখে তারা একই পথ বেছে নিচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সর্বশেষ গত শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখে বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলোর অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে ওঠে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংঘাত-সংঘর্ষ, জ্বালাওপোড়াও এবং বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে সেদিন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, এমনকি গণমাধ্যমকর্মীরাও আহত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলনের নামে দেশে ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি যাতে কেউ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে কেউ ২০১৩-১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করে বাংলাদেশের ক্ষতি করতে না পারে।

বাসে বিএনপির অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের চরিত্র আপনারা ভালো করেই জানেন, এরা সন্ত্রাসী। তারা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে। তারা ২০১৩-১৪ সালেও চলন্ত বাস, ট্রেন ও লঞ্চে আগুন দিয়ে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ বিএনপির ভয়ংকর চেহারা দেখেছে। কেন না, তারা আবারও আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিএনপি ইসলামের নামে রাজনীতি করেছে, অথচ ইসলামের প্রতি তাদের কোনো ভালোবাসা নেই। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তাদের কোনো অবদানও নেই তাদের।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকার প্রবেশপথ অবরোধের কর্মসূচি দেওয়ায় মার্কিন ভিসানীতির আওতায় পড়া উচিত বিএনপির। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকানদের উদ্দেশে বলব- সমাবেশের পরের দিন তারা (বিএনপি) কেন অবরোধ কর্মসূচি দিল? এটা কোন ধরনের গণতন্ত্র? এটা তো নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি তো তাদের ওপর প্রয়োগ করা উচিত। তাদের উদ্দেশ্য লাশ ফেলা। লন্ডন থেকে তারেক রহমান সেই কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, যারা নির্বাচন চায়, তারা সংঘাত চায় না। আমরা নির্বাচন চাই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা উত্তেজনায় যাব না। আমরা নির্বাচন চাই। তারা যে করেই হোক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি থাকবে, তবে ধরন পাল্টাবে। নির্বাচন পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি নেই। আমরা মাঠে আছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জনগণ শপথ নিয়েছে, এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবে না। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকে আমরা ভয় পাই না, বিএনপি কাপুরুষের দল নয়।

নেতাকর্মীরা বাজার করতে গেলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জেলখানায় নেতাকর্মীরা অসুস্থ। আরো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তাদের কোথায় রাখবেন? যতই অত্যাচার করেন না কেন, আন্দোলন চলবে। জনগণ শপথ নিয়েছে, এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে যাবে না।

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো দেশের পরিস্থিতি যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে মনে হয় লক্ষণ ভালো না। আমার তো মনে হয়, নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসবে, এ ধরনের ঘটনা ততই বাড়তে থাকবে। দেশ ক্রমাগত সংঘাতের রাজনীতির দিকে ধাবিত হবে। তিনি আরো বলেন, দেশে দুর্বল গণতন্ত্র থাকলে রাজনীতির প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে সংঘাত। আমরা ক্রমান্বয়ে সেদিকেই ধাবিত হচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত