ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিএনপিকে পঞ্চমবারের মতো সন্ত্রাসী সংগঠন বললেন কানাডার আদালত

বিএনপিকে পঞ্চমবারের মতো সন্ত্রাসী সংগঠন বললেন কানাডার আদালত

অভিবাসন-সংক্রান্ত মামলার রায়ে আবারো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছে কানাডার একটি আদালত। এ নিয়ে কানাডার আদালতে পঞ্চমবারের মতো বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করা হলো। গত ১৫ জুন টরন্টোর আদালতের এক রায়ে দেখা যায়, মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক নামের এক বিএনপি কর্মী দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলে কানাডার ফেডারেল কোর্ট তা নাকচ করে দেন। রায়ে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার জন্য আবেদনকারী বিএনপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিএনপি বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করছে। সন্ত্রাসী দলের সদস্য হওয়ায় ওই ব্যক্তির রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল রিভিউটি দায়ের করেছিলেন। সেটিও খারিজ হয়ে গেছে।

রায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক। আবেদনকারী ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির সদস্য ছিলেন বলে দাবি করেছেন। কানাডার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ মনে করে, বিএনপি বলপ্রয়োগ এবং নাশকতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছে এমনটি বিশ্বাস করার কারণ আছে।

কানাডার ফেডারেল কোর্টের রায়ের মানদণ্ড হিসেবে ২০১৮ সালে মাসুদ রানা ও ২০২২ সালে সেলিম নামে বিএনপির অপর দুই কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করার প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। ওই দুই আবেদনকারীর রায়েও বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল। তারও আগে ২০১৭ সালে ঢাকার মিরপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী পরিচয়ে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন গাজীর আবেদন নাকচ হয়েছিল। তখনো বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেছিল কানাডার আদালত।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির কর্মী পরিচয়ে মো. মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তির কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। তখন কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেছিল। গত বছর ছাত্রদল কর্মী পরিচয়ে আবেদন করা সেলিম বাদশার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনও কানাডায় নাকচ হয়। সেই রায়েও কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করে।

যদিও এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। কয়েকজন সিনিয়র নেতার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারাও কোনো মন্তব্য করেননি। এর আগে চারবার কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার পরও বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির এ ধরনের মৌন অবস্থান রহস্যজনক। বিষয়টি তারা মেনে না নিলে হয়তো প্রতিক্রিয়া জানাত। কিংবা কানাডার আদালতের কাছে আপিল আবেদন করত। অথবা ঢাকাস্থ কানাডার দূতাবাসের কাছেও এ ব্যাপারে তাদের অবস্থানের কথা জানাতে পারত। কিন্তু কানাডার আদালত বিএনপিকে একে একে ৫ বার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার পরও বিএনপির আইনজীবীরা এ ব্যাপারে কোনো প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। বিএনপির এমন নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে রাজপথের এই দলটি আসলে কানাডার আদালতের রায়ের বাইরে নয়। কানাডার আদালতের রায়ের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বিএনপি কার্যত কানাডার আদালতের রায়কে মেনে নিয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত