ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের

সংবিধান ও বিচার অঙ্গন নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি

সংবিধান ও বিচার অঙ্গন নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের বিচারব্যবস্থা ও সংবিধানকে বারবার কলঙ্কিত করেছে বিএনপি। বিএনপি আজ তাদের শীর্ষ নেতাদের অপরাধ থেকে বাঁচানোর জন্য সংবিধান ও বিচার-অঙ্গন সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গতকাল দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় আইনের বিবেচ্য বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সুসংহত করেছে। দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্য দূরভিসন্ধিমূলক।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের নেতারা দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। অথচ বিএনপির দুর্নীতিপরায়ণ শীর্ষ নেতৃত্বের অপরাধ দীর্ঘ বৈচারিক প্রক্রিয়া এবং সাক্ষ্য প্রমাণের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের রায়ে তাদের শাস্তি হয়েছে। একুশে আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, দুর্নীতির বরপুত্র দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমানের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের প্রতিনিধি এসে সাক্ষ্য দিয়েছে। জিয়া পরিবারের পাচারকৃত ৪০ কোটি টাকা বিদেশ থেকে ফেরত আনা হয়েছে। এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে বেগম খালেদা জিয়াও সাক্ষ্য প্রমাণের মধ্য দিয়ে এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণ এবং যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা পরিচালিত হয়েছে এবং বিজ্ঞ আদালত আইনের বিধান অনুযায়ী দোষীদের শাস্তি প্রদান করেছেন। বিএনপি নেতাদের নামে পরিচালিত এসব মামলায় সরকারের কোনো যোগসূত্র নেই। ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এসব মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় বর্তমান সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। সুদীর্ঘ বৈচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আইনের নিজস্ব গতিতে তা পরিচালিত হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু দেশবাসী জানে, দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এবং সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হওয়ায় মামলা খারিজ করেছে উচ্চ আদালত।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন, জনমত, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি কোনো কিছুর প্রতি জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপির কোনো প্রকার আস্থা নেই। তাই তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করেছিল। দলীয় বিচারপতি নিয়োগের পথ সুগম করার জন্য সংবিধান লঙ্ঘন করে ৪ জন বিচারপতিকে জোরপূর্বক বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল জিয়াউর রহমান। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে খালেদা জিয়া। বিচার বিভাগকে তারা দলীয় আঙ্গিনায় রূপান্তরিত করেছিল। হাওয়া ভবন থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো সব কিছু। বিএনপির আমলে তারা প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি পর্যন্ত মেরেছে। ল’ ডিগ্রি নেই এমন লোককে তারা হাইকোর্টের বিচারক বানিয়েছিল এবং প্রমাণিত হওয়ার পর সে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীর পুত্রকে জামিন দিতে দেশের আইন ও কোর্টের বিধি লঙ্ঘন করে হাইকোর্টের একজন বিচারক রাতের বেলা তার ঘরের মধ্যে কোর্ট বসিয়েছিল। তাদের দলীয় রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের অবৈধভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের বিচারকার্য চলমান থাকা অবস্থায় তৎকালীন বিএনপি দলীয় অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশে গঠিত বেঞ্চ নজিরবিহীনভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত