ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাঁদপুরের আড়তগুলোতে বেড়েছে ইলিশ আমদানি

দামও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে
চাঁদপুরের আড়তগুলোতে বেড়েছে ইলিশ আমদানি

চাঁদপুর নৌ-সীমানায় এ বছর রুপালি ইলিশের দেখা তেমন মিলছে না। যা মিলছে তা আকাশচুম্মি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে চাঁদপুরের প্রায় অর্ধশত মৎস্য আড়তে এ বছর ব্যবসায়ীরা ইলিশের আমদানি কম হওয়ায় হতাশা আর উৎকণ্ঠার মধ্যে ইলিশ মৌসুম পার করতে যাচ্ছিল। এ বছর ইলিশ মৌসুমে ইলিশের আমদানি কম হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের আমদানিকৃত ইলিশ অতি চড়া দামে প্রতিকেজি ইলিশ ২ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আবার ২ কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হতেও দেখা গেছে। এ ছাড়া ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি ১৮০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ চারটি এক হালি ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

তবে এ সময়ে আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বৃষ্টি হওয়ায় ইলিশের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন প্রতি কেজি ইলিশ গত কয়েক দিন ধরে বিক্রি হয়ে ছিল ২০০০ হাজার থেকে ২২০০ টাকায়। গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার ইলিশের আমদানি বিগত সময়ের তুলনায় পরিমাণে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ১ কেজি ওজনের ইলিশ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে, ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। এ ইলিশই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে, ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।

সরকারের মৎস্য অধিদপ্তর থেকে ঘোষিত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর চলতি মৌসুমে এই প্রথম ইলিশের আমদানি চাঁদপুরে বেড়েছে। দেশের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র্রে চাঁদপুর মাছঘাটে এক দিনের ব্যবধানে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে দ্বিগুণ। গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর মাছঘাটের আড়তগুলোতে ইলিশ আমদানি হয় ১৫০ মণ। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশ মাছ আমদানি হয়েছে প্রায় ৩০০ মণ। দামও তুলনামূলক কিছুটা কমেছে। সকাল ১১টায় মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে ইলিশ বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে আড়তগুলো। পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা ক্রেতা ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। দক্ষিণাঞ্চলের নোয়াখালি, হাতিয়া ও ভোলা অঞ্চল থেকে ট্রলার ও সড়ক পথে ট্রাকে করে ইলিশ আসছে চাঁদপুর মাছঘাটে।

বেশ কিছু সময় ঘাটে অবস্থান করার পর দেখা গেছে, মাছঘাট সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদী দিয়ে আসা ট্রলারগুলো থেকে শ্রমিকরা ইলিশ আড়তে এনে স্তূপ করে রাখছে। এরপর হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। আবার কিছু ইলিশ রপ্তানি করার জন্য বাক্স ভর্তি করছেন অসংখ্য শ্রমিক। আবার খুচরা কেনার জন্য স্থানীয় ক্রেতারা ভিড় জমিয়ে অবস্থান করছেন।

মেসার্স কালু ভুঁইয়া মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. ফারুক মিজি জানান, গতকাল শুক্রবার বাজারে ২৫০ গ্রামের অর্থাৎ ৪টায় কেজি ইলিশ প্রতিমণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ হাজার টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৪৮-৫০ হাজার টাকা। আর দেড় কেজি থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। তবে বড় সাইজের ইলিশের সংখ্যা কম দেখা যায় এ সময়। তিনি আরো জানান, গত এক সপ্তাহে ইলিশের আমদানি কম ছিল। তবে সাগরে নিম্নচাপ থাকার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের জেলেরা মাছ আহরণ থেকে বিরত ছিল। যার ফলে বুধবার ও বৃহস্পতিবার আহরণকৃত সব ইলিশ আজকে মাছঘাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা।

চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সবে বরাত সরকার জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি হওয়ার কারণে জেলেরা আগের চেয়ে ইলিশ কিছুটা বেশি পাচ্ছেন। আশা করছি নদীতে পানি ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ইলিশের আমদানি আরো বৃদ্ধি পাবে।

এ জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম জানান, গত ১০ দিন আগেও ইলিশের সরবরাহ খুবই কম ছিল। দামও ছিল অনেক চড়া। গত দুই দিন ইলিশের আমদানি প্রচুর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও কমেছে অনেক। আমরা মাছঘাটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। বর্তমান সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টি ও নদীতে পানির স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে আগের চেয়ে অনেক বেশি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত