ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিদেশিদের আলোচনায় ছিল না তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গ

এখন কোন আশায় থাকবে বিএনপি

এখন কোন আশায় থাকবে বিএনপি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশিদের তৎপরতা বেড়েছে। বিদেশিদের ওপর নির্ভর করেছিল দেশের রাজপথের বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে হতাশ হয়েছে। বিদেশি মিশনের পর্যবেক্ষকরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কথা বললেও কোনো দেশ বাংলদেশে আগামী দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একটি কথাও বলেনি। এসব দেশ চাচ্ছে বাংলাদেশে সংবিধান অনুসারে বর্তমান সরকারের অধিনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংশ্লিষ্ঠ সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, বিএনপি আশা করেছিল বিদেশিরা বর্তমান সরকারকে চাপ দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে। বিদেশিরা বিএনপিকে রাতারাতি ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু সে আশা নিরাশায় পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে বিএনপির পাশে দাঁড়ায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল এবং সর্বশেষ ভারতের বক্তব্যে বিএনপি হতাশ হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে। এসব দেশ বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের আলোকে মতামত তুলে ধরছে। বংলাদেশ নিয়ে যেসব বিদেশি মিশন তৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের সবার দাবি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। কিন্তু কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো পর্যায়ে কথা বলেনি। ফলে বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদারে মনোবল হারিয়েছে। এদিকে আদালতের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।

এখন বিএনপির যেসব নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন তা বাস্তবায়নে তারা কতটা ভূমিকা পালন করতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিএনপির তত্ত্বাবায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, কোনো নির্দিষ্ট দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি, যেটি বাংলাদেশের জনগণকে আগামী সরকার নির্বাচনের সুযোগ করে দেবে। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনুযায়ী, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সমর্থন করি। যেখানে কোনো পক্ষ থেকেই সহিংসতা হবে না। আমরা বিশ্বাস করি, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রত্যেকের ভূমিকা আছে। সরকার, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, বিচার বিভাগ, সুশীল সমাজ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী জানতে চাইলে পিটার বলেন, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অবস্থান নেই। এটি রাজনৈতিক দলের ব্যাপার। আমরা কেবল অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহী।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সে দেশের জনগণ ঠিক করবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, তার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে ভারত। দেশটি চায় এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত হোক। আমার মনে হয় বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে চায়, সেভাবে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের মেনে নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো মন্তব্য নেই বলে জানান অরিন্দম বাগচি। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছিল। তারাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো কথা বলেননি। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠনোর বিষয়ে ইতিবাচক কথা বলে গিয়েছে। এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজনীতির অঙ্গনে বিএনপি হচ্ছে ভয়ংকর এক বিষফোঁড়া। এই বিষফোঁড়া যত দিন আছে তত দিন হত্যা, ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, যত প্রকার অশান্তি, অস্থিরতা, সবকিছু থাকবে। ’৭৫ তাদেরই সৃষ্টি। মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান। ৩ নভেম্বর, মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান। একুশে আগস্ট, মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান। হাওয়া ভবনের যুবনেতা।

বিএনপি নির্বাচন চায়না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এরা নির্বাচন মনেপ্রাণে কোনোদিনও চায়নি। এদের আসল উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্র করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া। ষড়যন্ত্রের অলিগলি চেনে তারা।

অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্য কী বলল অথবা ভারত কী বলল, তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই। জনগণ চাচ্ছে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।

এবার জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে হবে, এদের ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত