ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রাম-বান্দরবানে বন্যায় ডুবে আছে সড়ক-ঘরবাড়ি

বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটে সমস্যা
চট্টগ্রাম-বান্দরবানে বন্যায় ডুবে আছে সড়ক-ঘরবাড়ি

চট্টগ্রামে টানা বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও বান্দরবান শহর। বান্দরবান শহর চট্টগ্রাম থেকে এখন বিচ্ছিন্ন। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার বিস্তীর্র্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে পানিতে। বান্দরবান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও কক্সবাজারগামী দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া জেলা শহর থেকে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে গতকাল বুধবারও যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে গত মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি কম হওয়ায় গতকাল পানির প্রবাহ কমেছে। তবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের সহযোগিতায় বান্দরবান, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও চন্দনাইশের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘক্ষণ টানা বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যার ফলে এলাকার লোকজন মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এদিকে সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নে নৌকাডুবে নারী শিশুসহ ছয়জন নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে দুইজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে মধ্যবয়সি এক পুরুষ ও তিন শিশু। গত মঙ্গলবার বিকালে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তিন উপজেলার মধ্যে সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, ঢেমশা, সদর ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সোনাকানিয়া ইউনিয়ন, চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ও দোহাজারী পৌরসভার আশপাশের এলাকা এবং লোহাগাড়ার আধুগনগর, চুনতি, কলাউজান, পটিবিলা, পদুয়া ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। চন্দনাইশের হাশিমপুর কসাইপাড়া থেকে লোহাগাড়া পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কের একাধিক জায়গায় পানিতে ডুবে রয়েছে। সড়কের ওপর প্রায় কোমর সমান থেকে বুক সমান পানি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারগামী বহু গাড়ি জলজটে গত মঙ্গলবারের মতো গতকাল বুধবারও আটকা পড়ে। এতে দূরপাল্লার যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহান। এছাড়া তিন উপজেলায় বহু বসতঘর পানির স্রোতের ভেঙে গেছে। লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার কবলে পড়া লোকজনকে উদ্ধার ও সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, বেশ কয়েকটি ঘর ধসে পড়েছে। বেশ কিছু মাটির ঘরও ধসে পড়ার শঙ্কা আছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু হানিফ জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের কসাইপাড়া, সাতকানিয়ার কেরানিহাট, আশপাশ এলাকা ও লোহাগাড়া উপজেলার কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। যার ফলে মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। বিছিন্নভাবে কয়েকটি যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বর্তমানে বিকল্প সড়ক আনোয়ারা দিয়ে বাঁশখালী হয়ে কক্সবাজারগামী যানবাহন চলাচল করছে। এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রাম জেলায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৭৫৩ জনকে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, এখন পর্যন্ত প্রাথমিক হিসেবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত