ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

খুনের ঘটনায় দুই বছর পর গ্রেপ্তার ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা

খুনের ঘটনায় দুই বছর পর গ্রেপ্তার ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা

দুই বছর আগের একটি খুনের ঘটনায় মুঠোফোনের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শেখ মারুফ হোসেন ওরফে সুজনকে আটক করেছে পুলিশ। গত বুধবার যশোরের বেনাপোল থেকে আটক হন তিনি। গ্রেপ্তারকৃত মারুফ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান আলোকিত বাংলাদেশকে তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১ জুন আবুল হাসান নামের এক যুবককে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চলে যান কয়েকজন যুবক। ওই দিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে আবুল হাসানের বাবা আব্দুল মতিন। সম্প্রতি আবুল হাসানের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়ে পুলিশ জানতে পারে, এটি অপমৃত্যু নয়। হত্যা করা হয়েছিল আবুল হাসানকে। আবুল হাসান রাজধানীর ইস্টার্ন মল্লিকার একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদরে। তিনি পরিবারের সঙ্গে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসায় থাকতেন।

আবুল হাসান মাদক সেবন করতেন। সে কারণে ২০২১ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে এক দিন সন্ধ্যায় ঢাকার নীলক্ষেতে যান। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা মারুফ এবং তার দুই বন্ধু তরিকুল ইসলাম (তারেক) ও রাজিব হোসেনের সঙ্গে তার দেখা হয়। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে আবুল হাসানের কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। এর জের ধরে এক সপ্তাহ পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আবুল হাসানের ওপর হামলা চালান মারুফ ও তার ওই দুই বন্ধু। এদের মধ্যে তরিকুলও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আবুল হাসানকে আহত অবস্থায় ওই তিনজনই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ঘটনার দীর্ঘ দুই বছর পরে আবুল হাসানকে ঢামেকে ভর্তি করানোর সময় যে নাম্বার দেয়া হয় তার সূত্র ধরে পুলিশ মারুফকে শনাক্ত করে। গত বুধবার যশোরের বেনাপোল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ এদিন হত্যাকাণ্ডে দোষ স্বীকার করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তরিকুলসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অমল কৃঞ্চ দে বলেন, খুনের ঘটনা থেকে বাঁচতে আসামি তরিকুল ইসলাম ইচ্ছাকৃতভাবে সেদিন ঢাকা মেডিকেলের নিবন্ধন খাতায় নিজের নাম-পরিচয় লুকিয়েছিলেন। আর যে নম্বরটি তিনি উল্লেখ করেছিলেন, সেটি ছয় বছর ধরে বন্ধ ছিল। ওই নম্বরের সূত্র ধরে তাঁরা আবুল হাসান খুনের বিস্তারিত ঘটনা জানতে পারেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, শেখ মারুফ হোসেন খুনের মামলায় জড়িত হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু আসেনি। আসলে বিশ্ববিদ্যালয় পদক্ষেপ নিবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত