প্রেসক্লাবে তথ্যমন্ত্রী

বিএনপি জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় কয়েকজন জঙ্গি আটকের পর মির্জা ফখরুল সাহেব বললেন- ‘মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য না কি এই জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে।’ এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি মহাসচিবসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তিনি বলেন, আমরা বিএনপি মহাসচিবের এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা জঙ্গি দমন করেছি, আমরা জঙ্গি নির্মূল করতে পারতাম যদি তারা জঙ্গিগোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা না করত।

গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরাম’ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপির যেমন চেয়ারম্যান তেমন মহাসচিব। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকার যখন কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছিল, অনেক জঙ্গি আটক হচ্ছিল, তখন বেগম জিয়া বলেছিলেন, কিছু মানুষকে ধরে নিয়ে কিছু দিন আটক করে রাখার পর যখন চুলদাড়ি লম্বা হয় তখন তাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়। সে কারণেই তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন পাঁচশ’ জায়গায় বোমা ফেটেছিল, শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইয়ের উৎপত্তি হয়েছিল এবং জঙ্গিদের দিয়ে হাওয়া ভবন তৈরি ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে দেশ যখন অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও তাদের দোসররা তখন নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছিল মাঝেমধ্যে দুয়েকটা বিবৃতি এনেছিল। কংগ্রেসম্যানদের বিবৃতি নিয়ে আমেরিকার হোয়াইট হাউজে যখন প্রশ্ন করা হলো, তারা বলল এ বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। অথচ এই চিঠি লেখার পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে।

অর্থাৎ এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, এই ষড়যন্ত্র করে, বিদেশিদের পেছনে এতো ছুটে কোনো লাভ হয়নি। সে কারণে বিএনপি এখন ভিন্ন সুরে কথা বলা শুরু করেছে। বিএনপির দাবি কেউ সমর্থন করেনি। এজন্য বিএনপির সুর এখন ভিন্ন। এখন তারা বলছে ভারত কি বলল তাতে কিছু আসে যায় না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি বলল আসে যায় না, যুক্তরাজ্য কি বলল আসে যায় না, চীন কি বলল আসে যায় না।

হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন, তারেক রহমানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়নি। এখানকার মার্কিন দূতাবাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে তারেক রহমানকে ভিসা না দেওয়ার জন্য প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছিল। সেই তারেক রহমান যখন সেই দলের চেয়ারপারসন হয় ভারপ্রাপ্ত সুতরাং সেই দলকে কেউ সমর্থন করতে পারে না। কানাডার আদালত পরপর পাঁচবার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডিপার্টমেন্টর বিএনপিকে ফোর টায়ারের জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যেটি পত্রপত্রিকায় আপনারা ছাপিয়েছেন। যারা জঙ্গিগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক জঙ্গিদের লালন-পালন করে তাদের কোনো বিদেশি শক্তি সমর্থন করে না। আর দেশের জনগণ তো তাদের সঙ্গে নেই। সুতরাং তাদের সঙ্গে কেউ নেই।

১৫ আগস্ট নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের প্রধান কুশীলব ছিল দুইজন, একজন হচ্ছেন খন্দকার মুশতাক আরেকজন হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। জিয়া এবং তার পরিবারই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই খন্দকার মোশতাক ক্ষমতা গ্রহণ করে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সেনাপতি নিয়োগ করেছিল। আর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর সমস্ত খুনিদের দেশে এবং বিদেশে পুনর্বাসিত করেছিল, বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে চাকরি দিয়েছিল। আবার ১৯৭৯ সালে সংসদ গঠনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বিল উপস্থাপন করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যাতে না হয় সেজন্য সেটি পাস করা হয়। জিয়াউর রহমান কীভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল এগুলোই তো তার প্রমাণ।

এ সময় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের বিচার হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা যদি আমরা না করি তাহলে আজ থেকে শত বছর পর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারবে না কারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পটভূমি রচনা করেছিল, কারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে কুশীলব ছিল।