ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাঈদীর গায়েবানা জানাজা

আবার সন্ত্রাসী চরিত্রে জামায়াত-শিবির

আবার সন্ত্রাসী চরিত্রে জামায়াত-শিবির

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার নামে সারা দেশে আবারও ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। তবে সরকারও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে গিয়েছে। সূত্র জানায়, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জামায়াত-শিবির সহিংসতা করতে চাইবে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেও সহিংসতা করেছিল দলটি। এখন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ইস্যু বানিয়ে সহিংসতা করছে তারা। তাদের ওপর ভর করেই বিএনপি সহিংসতা করার সাহস পায়। এর আগেও তারা এক হয়ে সহিংসতা করেছে। সর্বশেষ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকদের ওপরও হামলা করেছে।

সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ মোড়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে। এতে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার জন্য মামলা দেয়া হয়েছে।

বিএসএমএমইউতে হামলায় মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বেআইনিভাবে যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা প্রদানের পর আক্রমণ করে সাধারণ ও গুরুতর জখম এবং অগ্নিসংযোগ করার অপরাধ করা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার বিকালে সাড়ে ৫টার দিকে বুকে ব্যথাজনিত সমস্যার কারণে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার ইসিজিসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ওইদিন রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় সাঈদীকে। পরদিন সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাঈদীর মৃত্যু হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সব চিকিৎসা আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করে ও বিধিসম্মতভাবেই হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ইমারজেন্সি বিভাগে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আনিত রোগী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ভর্তি শুরু থেকে পরবর্তী সব চিকিৎসা বিধিসম্মতভাবে আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করে শেষ করা হয়। তার চিকিৎসায় এ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সব চিকিৎসাদানকারী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সঠিকভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন।

এতে বলা হয়, ভর্তির পরদিন (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে তার সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর তার অ্যাডভান্স কার্ডিয়াক লাইফ সাপোর্ট প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা চলতে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ রোগের গতিপ্রকৃতি, চিকিৎসা ও সম্ভাব্য পরবর্তী পরিণতি সম্পর্কে তার সন্তান মাসুদ সাঈদী সম্যকভাবে জ্ঞাত রয়েছেন বলেও জানানো হয় এ বিজ্ঞপ্তিতে।

বাঙালির জীবনের বেদনাবিধুর আগস্ট মাস এলেই বিএনপি-জামায়াত নাশকতার ছক কষে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর হাসপাতালে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। সেটিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা হচ্ছে। এটি শোকাবহ আগস্ট মাসজুড়ে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনারই অংশ।

আগস্ট মাস এলেই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও জঙ্গিগোষ্ঠী তৎপর হয়ে ওঠে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। ১৭ আগস্ট সারাদেশে ৫০০ জায়গায় বোমা ফোটানো হয়েছে। ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলাতেই বোমা ফোটানো হয়েছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, জামায়াত-শিবিরের বিষয়ে তাদের কোনো কিছু করার নেই। জামায়াতের নিবন্ধন না থাকায় ইসির কোনো বক্তব্য নেই। তবে তারা বলেছে, দেশের আইন আনুযয়ী সহিংসতাকারিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে সরকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত