প্রথম দিনে বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা

৮ বোর্ডের ১০ লাখ শিক্ষার্থী এইচএসসিতে বসছে আজ

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের আটটি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ। দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১০ লাখ ৭ হাজার ২৪১ জন পরীক্ষার্থী। তবে বন্যার কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া তিন বোর্ডের সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে এইচএসসিতে বসতে আরো ১০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। আজ থেকে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে একযোগে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। এ পরীক্ষা অংশ নিতে মোট ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। তাদ্রে মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। সারাদেশে মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৬৫৮টি এবং মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ১৬৯টি। তবে বন্যার কারণে চট্টগ্রাম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়। চারটি বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ায় আগামী ২৭ আগস্ট এ তিন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হবে। এ চারটি বিষয়ের পরীক্ষা কবে নেওয়া হবে, সেই সময়সূচিও ঘোষণা করেছে তিন বোর্ড। চলতি বছর একটি বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণসময়ে পরীক্ষা হবে। শুধুমাত্র আইসিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদ্রে দাবির মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা বোর্ডগুলো এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে প্রশ্নফাঁস ও নকলমুক্ত সুষ্ঠু পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ড। এর মধ্যে অন্যতম কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা। গত ১৪ আগস্ট থেকে সারাদেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোচিং বন্ধ রাখা হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানান ‘স্ব স্ব বোর্ড পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে। প্রশ্নফাঁস, পরীক্ষার কেন্দ্র ও কক্ষকেন্দ্রিক যেসব নির্দেশনা, সেগুলোও দায়িত্বপ্রাপ্তদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আশা করি, শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু ও সুন্দ্র পরিবেশে পরীক্ষা দেবে।’ পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আন্দোলন ও নানা ঘটনায় শিক্ষার্থীদ্রে মনে প্রভাব পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা পরীক্ষা পেছানোর জন্য আন্দোলন করেছিল, তারাও বুঝেছে-যথাসময়ে পরীক্ষা হলে ভালো হবে। তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে এখন পড়ার টেবিলে। আশা করি, সবাই ভালো পরীক্ষা দেবে এবং ভালো ফল করবে।’ গত কয়েক বছরের মতো এবারও এইচএসসির পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থী, পরিদর্শক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদ্রে প্রবেশ এবং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু বিধিনিষেধ থাকছে। প্রশ্নফাঁস বা বিতর্ক এড়াতে কড়াকড়ি আরোপ করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডগুলো। বিধিনিষেধের মধ্যে অন্যতম হলো-পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময় বা পরীক্ষা শুরুর পর (১০টা ৩০ মিনিটের বেশি নয়) প্রবেশ করেন, তাহলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্বের কারণ রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওই দিনই শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শকদ্রেও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।

সেগুলোর বর্ণনা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্র সচিবকে প্রশ্নের সেট কোড জানিয়ে দেবে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রিক কোনো ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও ছবি তোলা যায় না- এমন মোবাইল ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেমন- পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।

ঢাকা বোর্ডের সংশোধিত কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ : এদিকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা ২০২৩-এর সংশোধিত কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড। গতকাল বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আবুল বাশার স্বাক্ষরিত সংশোধিত কেন্দ্র তালিকা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

এতে কেন্দ্র তালিকা, কেন্দ্রের কোড নম্বর, কেন্দ্রের আওতাধীন কলেজের নাম, কলেজের কোড নম্বর, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা ইত্যাদির বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। আজ থেকে সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। কেন্দ্র তালিকার বিষয়ে বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের নিকট থেকে কেন্দ্র ফি’র টাকা গ্রহণ করে গোপনীয় কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে, অলিখিত উত্তরপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে সংগ্রহ করে পরীক্ষা পরিচালনা করবেন। প্রতিদিন পরীক্ষা শেষে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ডাক যোগে ওএমআর’র প্রথম অংশ ঢাকা শিক্ষাবোর্ড কম্পিউটার কেন্দ্রে এবং উত্তরপত্রসমূহ পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালা মোতাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পাঠাবেন।

ভেন্যু কেন্দ্রসমূহ মূল কেন্দ্র থেকে টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গ্রহণ করে পরীক্ষা পরিচালনা করবেন এবং পরীক্ষা শেষে এতদসংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র মূল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জমা দেবেন। জেলা সদরে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরীক্ষা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত কলেজের অধ্যক্ষ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হবেন অধ্যক্ষ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা কলেজের সিনিয়র কোনো অধ্যাপক।