লাগেনি মেরামতের ছোঁয়া

চট্টগ্রামে বর্ষণে ভেঙে গেছে বহু সড়ক

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  তামীম রহমান, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম অঞ্চলে চলতি মাসের ভারি বর্ষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো এখনো মেরামত করা হয়নি। চট্টগ্রাম নগরীর সড়কগুলো ছাড়াও আশপাশের উপজেলা সদর ও পৌর এলাকার সড়কগুলোরও বেহাল দশা। এতে লোকজন চলাচলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে। নগরী ও জেলার অনেক সড়ক এখনো চলাচল অযোগ্য। আর এই সড়ক মাড়িয়ে নিত্য চলাচল করতে হচ্ছে লোকজনকে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) সূত্র জানায়, ভারি বর্ষণের সময় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শধু এই খাতেই শত শত কোটি টাকার ক্ষতি নিরূপণ করা হয়। কিছু কিছু জায়গায় দ্রুত মেরামত করা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে এখনো মেরামতের ছোঁয়া লাগেনি।

চসিকের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামে নগরীর সড়ক অবকাঠামোর পরিমাণ বেশ বড়। সড়কের পরিমাণ মোট ১১০০ কিলোমিটার। সড়কগুলো বয়ে গেছে চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শাহ আমানত সেতু এবং কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত। নগরীর অলঙ্কার মোড় থেকে ট্রাঙ্ক রোড, বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে স্ট্যান্ড রোড, কাপাসগোলা রোড, পোর্ট কানেক্টিং রোড, বায়েজিদ বোস্তামী রোডসহ ৬শ’টির মতো পিচঢালা রাস্তা রয়েছে। এর বাইরে নগরীতে ইট বিছানো এবং কাঁচা রাস্তাও রয়েছে। নগরীর পিচঢালা ১১০০ কিলোমিটার পথেই মূলত ভারি যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু এই সড়কগুলোর অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। বড় বড় খানাখন্দে ভরে গেছে প্রায় প্রতিটি সড়ক।

চসিকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ভারি বর্ষণের পর পরই সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। বিভিন্ন স্থানে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে অগ্রাধিকার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। এরপর কিছু কিছু সড়ক জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করা হয়। আবার কিছু কিছু সড়কে মেরামত কাজ শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়। সড়ক মেরামতে বেশ বড় অংকের অর্থও বরাদ্দ করা হয়। আশা করছি বাকি সড়কগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের কাজ শেষ করা হবে।

সড়ক অবকাঠামো মেরামতের সঙ্গে যুক্ত একজন প্রকৌশলী জানান, চসিক এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে সড়ক অবকাঠামো নষ্ট হয়। তার একমাত্র কারণ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার। এতে প্রতি বছর ভারি বর্ষণে সড়ক ভেঙে পড়ে। আবার প্রতি বছরই চসিককে মেরামত খাতে অর্থ ব্যয় করতে হয়। ঠিকাদারের পেছনে অর্থ বরাদ্দ করতে গিয়ে চসিকের তহবিল ঘাটতি হয়। অথচ নির্মাণ কাজ শুরুর সময়ই যদি ভালো উপকরণ ব্যবহার করা হতো তাহলে এভাবে সড়ক অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যেত না।

নগরীর হামজারভাগ এলাকার বাসিন্দা আজিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টিতে ভেঙে যাওয়া মূল সড়ক কিছুটা মেরামত করা হয়েছে। তবে অলিগলির সড়কগুলো এখনো মেরামত করা হয়নি। এতে চলাচলে লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমরা আশা করছি খুব সহসা নষ্ট সড়কগুলো মেরামত করে দেয়া হবে।

নগরীর শোলক বহর এলাকার বাসিন্দা শামিমুর রহমান বলেন, প্রতি বছরই শোলক বহর এলাকার লোকজন দুর্ভোগে পড়েন। বলতে গেলে সারা বছরই দুর্ভোগে পড়েন দুর্বল নড়বড়ে সড়ক অবকাঠামো নিয়ে। পুরো এলাকায় ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামতের কাজ এখনো শুরুই করা হয়নি। অথচ এই এলাকায় স্কুল মাদ্রাসায় শত শত শিক্ষার্থী নিত্য চলাফেরা করেন। বাসিন্দার সংখ্যাও কয়েক লাখ। চলাচলের এক মাত্র অবলম্বন সড়ক ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগ কমছে না। মূল সড়ক মেরামত হলেও অলিগলির সড়কগুলো এখনো মেরামতহীন অবস্থায় রয়েছে। এদিকে নগরীর আশপাশের বহু উপজেলায় বর্ষণে ভেঙে পড়া সড়ক অবকাঠামো মেরামত হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর জানান, ভারি বর্ষণে সৃষ্টি জলাবদ্ধতায় বহু সড়ক ডুবে যায়। এসব সড়ক দীর্ঘ সময় পানির নিচে থাকায় একেবারেই ভেঙে যায়। কিন্তু মেরামতকাজ শুরু না হওয়ায় চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কখন মেরামত কাজ শুরু করা হবে তা নিশ্চিত করতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন।