ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিএনপির নির্বাচন প্রতিহতের অপচেষ্টা জনগণ দমন করবে

বললেন তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির নির্বাচন প্রতিহতের অপচেষ্টা জনগণ দমন করবে

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি যে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেয়, তাতে কিছু আসে-যায় না। তারা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্জন করেছিল, জনগণ বর্জন করে নাই, ৫০ শতাংশের বেশি ভোট মানুষ দিয়েছে। নির্বাচন বর্জন করার অধিকার তাদের অবশ্যই আছে। কিন্তু যদি কেউ নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করে, এ দেশের মানুষ কঠোর হস্তে তা দমন করবে। সেই সাথে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে মন্ত্রী বলেন, এটি ২০১৪ সাল নয়, এটি ২০২৩ কিম্বা ২০২৪ সাল। সুতরাং, এখন ওই ২০১৩-২০১৪ সালের অরাজকতার পুণরাবৃত্তির অপচেষ্টা দেশের মানুষ করতে দেবে না।

গতকাল বিকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে আইভি রহমান পরিষদ আয়োজিত ‘গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। আইভি রহমান পরিষদের আহ্বায়ক বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আআমস আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার জন্য বিএনপি নেতাদেরকে দায়ী করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মুশতাক এবং জিয়া আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক জিয়া। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতা টিকে থাকার জন্য এই হত্যা সে অব্যাহত রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর অফিসার এবং জওয়ানদের হত্যা করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের স্ত্রীর প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপি ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল কিন্তু জিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় নাই। কারণ কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হবে, সে জন্য।

‘বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আজকের বিএনপিও সেই হত্যার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারে নাই’- উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, তাদের দাবি প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষের ওপর পেট্রল বোমা মারে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করে, পুলিশ হত্যা করে। তারা স্কুলঘর পুড়িয়ে দেয়, সাথে শিশুদের স্বপ্নকেও পুড়িয়ে দেয়। ২০১৪ সালে ৫০০ স্কুলঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল, সাথে নতুন বইও পুড়িয়ে দিয়েছিল। বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন, ট্রেনে আগুন- এভাবে সব জায়গায় যে অগ্নিসন্ত্রাস, এটি বিএনপি করেছে। ঢাকা শহরে জিয়াউর রহমান যেমন গাছ কেটেছে তারাও ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে গাছ কেটেছে, মুরগিবাহী-গরুবাহী ট্রাকের ওপর হামলা, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা- এই হচ্ছে বিএনপির চরিত্র।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের স্বার্থে, সুস্থ রাজনীতির স্বার্থে মানুষ হত্যা, জিঘাংসার রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ চিরদিনের জন্য বন্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু যারা প্রতিহিংসা করে ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্ট ঘটিয়েছে, সুরঞ্জিত বাবুর সমাবেশে, শেখ হেলাল এমপির সমাবেশে বোমা হামলা চালিয়েছে, আহসান উল্লাহ মাস্টার, কিবরিয়া সাহেবকে বোমা মেরে হত্যা করেছে, সেই বিএনপি-জামায়াত যদি রাজনীতির দৃশ্যপটে থাকে, আমরা রাজনীতিকে কুলষমুক্ত করতে পারব না।

সমসাময়িক বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন দেখলাম তিন নেতা সিঙ্গাপুর গেছে। পত্রপত্রিকায় লিখছে- এটি কি আসলে চিকিৎসা, না কি আরো কোনো ষড়যন্ত্র করার উদ্দেশ্যে তাদের তিন নেতা একইসাথে সিঙ্গাপুর গেলেন। পত্রিকায় দেখলাম যে বিএনপি অফিসে ছাত্রদল তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কখন যে নয়াপল্টন অফিসে যুবদল তালা লাগিয়ে দিয়ে দেয়। সেটিই দেখার বিষয়। বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হয় নাই দেখে তাদের ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে।

এ সময় আইভি রহমানসহ গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইভি রহমান কর্মীবৎসল নেত্রী ছিলেন। সবসময় কর্মীদের খোঁজখবর রাখতেন, কর্মীদের সাথে থাকতেন, কর্মীদের সাথে বসতেন, একইসাথে তিনি অত্যন্ত সৌখিন ও সম্ভ্রান্ত মানুষও ছিলেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের বাড়ির সামনে সুন্দর ফুলের বাগানটা তার হাতে গড়া।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন, আইভি রহমান পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান খোকা, মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠন, ডিইউজে’র সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, গ্রেনেড হামলায় আহত অ্যাডভোকেট কাজী সাহানারা ইয়াসমীন প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত