ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সব সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ

* আমি মৃত্যুকে ভয় করি না। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব। * খালেদা জিয়া ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। * অশিক্ষিত-মূর্খদের হাতে দেশ পড়লে, সেই দেশের কোনোদিন অগ্রযাত্রা হতে পারে না।
সব সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ

বাংলাদেশ ছাত্রলীগই এ দেশের সব সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা যদি শহীদের খাতায় চোখ বুলাই তাহলে দেখব ছাত্রলীগই বুকের রক্ত দিয়ে প্রতিটি অর্জন আদায়ের সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস- এই কথা বলে গিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ কথাটা অক্ষরে অক্ষরে সত্য। আমরা যে বিদেশে ছিলাম দেশে আসতে পারিনি, তখন আমাদের ফিরে আসার দাবিটা প্রথমে ছাত্রলীগ করে। এভাবে বাংলাদেশের যে কোনো দুর্যোগে ছাত্রলীগ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির জন্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পাকিস্তানের শাসকরা আমাদের মাতৃভাষা কেড়ে নেওয়ার জন্য উর্দু আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। প্রথমে আঘাত আসল আমাদের ভাষার ওপর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এটার প্রতিবাদ করেন।

গতকাল শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ছাত্রসমাবেশে তিনি এ কথা করেন। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে গর্বে আমার বুক ভরে যায়। যদি তারা আদর্শ নিয়ে চলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, শহীদের খাতায় নাম দেখতে চাইলে দেখব- ছাত্রলীগই বুকের রক্ত দিয়ে সব সংগ্রামে ছিল। এমনকি ৭৫-এর পরে ছাত্রলীগই প্রথম প্রতিবাদ করে। বাংলাদেশের যে কোনো দুর্যোগে ছাত্রলীগ সক্রিয় ছিল, অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ২০০৭ সালে আমাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন ছাত্রলীগই মাঠে নেমেছিল। এ ছাত্রলীগই হচ্ছে সেই শক্তি, যারা একদিন এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। করোনায়ও ছাত্রলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিপদের সময় আমার নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাস্তে হাতে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। এজন্য তাদের প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস এবং আস্থা।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অল্প সময় পেয়েছিলাম, তখন বাংলাদেশের অনেক উন্নতি করেছি। ওই সময় খালেদা জিয়া ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। বলেছিল, ছাত্রদলই নাকি আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে যথেষ্ট। আর সেখানে আমি ছাত্রলীগের হাতে দিয়েছিলাম খাতা এবং কলম। বলেছিলাম, পড়াশোনা করতে হবে। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ না হলে, কোনো আদর্শ বাস্তবায়ন করা যায় না। আর অশিক্ষিত-মূর্খদের হাতে দেশ পড়লে, সেই দেশের কোনোদিন অগ্রযাত্রা হতে পারে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার মা সবসময় আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন। প্রেরণা জুগিয়েছেন, শক্তি জুগিয়েছেন। সংসার কাজের জন্য কখনো বিরক্ত করেননি। জাতির পিতা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছেন, সেটা আমার মা খুব ভালোভাবে জানতেন। তাই প্রতিটি কাজে তিনি সহযোগিতা করে গেছেন। তিনি খুব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে, বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে। সে কারণে আমার বাবার পাশে তিনি সব কিছু দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। ৭৫ সালে মৃত্যুকালে তিনি তার সাথী হলেন। জীবন ভিক্ষা চাননি, খুনিদের প্রতিবাদ করেছিলেন। তাকেও ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করে।

সরকার প্রধান বলেন, আমিও একসময় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলাম। আমার কেবিনেটে এখনো যারা আছে তারা সবাই ছাত্রলীগ করে আসা। আমরা যে প্রত্যেকটা কাজে দেশের অগ্রণী ভূমিকা করতে পেরেছি সেটাতে ছাত্রলীগের ভূমিকা রয়েছে। একটি আদর্শ নিয়ে এই সংগঠন তৈরি হয়, সেই সংগঠনই পারে একটি দেশে এগিয়ে নিয়ে যেতে। এক-এগারোতে ছাত্রলীগ আপস করেনি। সে সময় আমাদের ছাত্ররাই প্রথমে মাঠে নেমে এর প্রতিবাদ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে অনেক সংগঠন মানবাধিকারের কথা বলে। ৮১ সালে যখন আমি ফিরে এসেছি, তখন তো আমি মা-বাবা-ভাইবোন হত্যার বিচার চাইতে পারিনি। জিয়াউর রহমান খুনিদের ক্ষমতায় বসায়। প্রতি পদে পদে বাধা সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু কোনো বাধাই আমাকে আটকাতে পারেনি। আমি বাবার স্বপ্নপূরণ ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করে দেশে এসেছি। মাঠের পর মাঠ হেঁটেছি। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছি। দেখতে চেয়েছি, এদেশের মানুষের কী অবস্থা? আমার বাবা-মার রক্ত নিয়ে তারা দেশের কী করেছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মৃত্যুকে ভয় করি না। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব। দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করব। যেই চেতনা নিয়ে আমার বাবা এ দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সারা জীবন কষ্ট সহ্য করেছেন, তার সেই স্বপ্ন পূরণ করব। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই দেশে ফিরেছিলাম।

তারপর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল কীভাবে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ছাত্র সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছাত্রসমাবেশ সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত