তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য বিএনপি তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন রমনায় যুবলীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নয়াদিল্লির একটি সেলফি দেখে বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে এবং তাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এখন কাকে দেখাবে, কে নিষেধাজ্ঞা দেবে, কে ভিসানীতি দেবে? এসব আমরা ভয় পাই না। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির তো নেতা নেই। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দল নয়, সাম্প্রদায়িক ও অপকর্মের দল নয়। আওয়ামী লীগ সত্যের পক্ষে, জনগণের পক্ষে তাদের সুদৃঢ় অবস্থান যে কোনো মুহূর্তে জানান দেয় ও দিতে পারে। আওয়ামী লীগের শক্তি জনগণ। জনগণের সেই শক্তিকে নিয়েই আগামী নির্বাচনে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আজকে লাফালাফি বন্ধ হয়ে গেছে। দিন যায়, মাস যায়, দেখতে দেখতে ১৫ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর? বিএনপি মানুষের মনে আস্থা রাখতে পারছে না।

ড. ইউনূস প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অর্থ খরচ করে ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি কেনা হয়েছে। বিএনপি একেক সময় একেক জায়গায় ভর করে। হঠাৎ দেখলাম ইউনূস সাহেবের জন্য ১৬০ জনের বিশাল চিঠি। এই চিঠির দাম কত? এই স্টেটমেন্টের দাম দুই মিলিয়ন ডলার। ওই চিঠি কিনতে দুই মিলিয়ন ডলার লেগেছে। কোথায় পান এত টাকা? শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করে এগুলো চলছে। মির্জা ফখরুল বলেন আওয়ামী লীগ ড. ইউনূসকে অপমান করে এবং নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত গণ্যমাণ্য ব্যক্তিকে ছোট করে। যে মানুষ শহীদ মিনারে আসে না, স্মৃতিসৌধে আসে না, ১৫ আগস্টে কোনো শোক প্রকাশ নেই, এমনকি জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নেই, তিনি তো আমাদের দুঃখ-কষ্টে নেই, তাহলে তিনি মানুষকে আপন ভাববেন কী করে? আমাদের জন্য তার কোনো দরদ নেই। দেশের কোনো সংকটে তার কোনো অবদান নেই। তাহলে আমরা তাকে কেন ভালোবাসব?

তিনি বলেন, নোবেল বিজয়ী হয়েও ড. ইউনূস আমাদের দেশের কোনো দুঃখ-কষ্টে নেই। তার জন্য বিএনপির এত মায়াকান্না কেন আমি জানতে চাই? তারা ভেবেছে ওয়ান ইলেভেনের মতো একটি নাগরিক কমিটি করে সুশীল সরকার গঠন করবে। সেদিন চলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ কাকে ভোট দেবে সেটি তারা মনে মনে ঠিক করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের দল নয়, সাম্প্রদায়িক দল নয় ও অপকর্মের দল নয়। আওয়ামী লীগ সত্য ও জনগণের পক্ষে। যে কোনো পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সুদৃঢ় অবস্থানের জানান দিতে পারে। বিএনপির আন্দোলনে জনগণ নেই। শুধু আছে নেতাকর্মী। বিএনপি নেতারা কর্মীদের আশ্বাস দিচ্ছে যে- ভয় পেয়ো না আমেরিকা ও ইউরোপ আছে। তারা কর্মীদের কত কথা শোনাচ্ছে! অথচ একটি সেলফি দেখে কর্মীরা আর আশা রাখতে পারছে না।

যুবলীগের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কার্যক্রম রাজনীতিতে যুবলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে বেশ ভালো কাজ। এখানে যারা আসে তারা সারাজীবন যুবলীগ করবে না। খারাপ যুবক আমাদের প্রয়োজন নেই। খারাপ ২০ জনের চেয়ে ভালো দুইজন অনেক ভালো। খারাপরা নিজের অর্জনকে বিসর্জন দেয়। খারাপ আচরণের জন্য আমাদের মানুষের কাছে ছোট করে। আমরা জনগণের দল, জনগণের সঙ্গে আছি, জনগণকে ভালোবাসি। আমি তো মনে করি যুবলীগ রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে এক বৈশাখি ঝড়। নেত্রী কোনো ভুল করেননি। এখন পর্যন্ত যুবলীগ আন্দোলন-সংগ্রামে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ। যুবলীগ এখন পর্যন্ত অন্য সংগঠনের অনুকরণীয়। যুবলীগের ভালো কাজের প্রশংসা হওয়া উচিত। তাহলে আরো বেশি করে ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবে।

যুবলীগ চেয়ারম্যান ভালো বক্তৃতা দেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিতে পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। গৎবাঁধা কথা এখন আর কেউ শুনতে চায় না। কথা বলতে হবে রাজনীতির বস্তুগত প্রস্তুতি, সুসংগঠিত প্রস্তুতির আলোকে বঙ্গবন্ধু ও আমাদের নেত্রীর উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের আলোকে বক্তৃতা দিতে হবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।