নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বৈশ্বিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বাংলাদেশ 

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

বৈশ্বিক রাজনীতিতে দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র ব-দ্বীপরাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫২তম বছরে এসে বাঙালি যেন বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে আর দাবিয়ে রাখা যাচ্ছে না। সারাবিশ্বে নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করছে বাঙালিদের একমাত্র রাষ্ট্র। বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন বিশ্বনেতারা। কৌশলগত পরিকল্পনায় বৈশ্বিক জোটগুলোর কাছে দিন দিন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে এ দেশটি।

এ অর্জনের পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব কাজ করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লষ্টিরা। তাদের মতে, গত দেড় দশকে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হয়ে উঠছে। তার বিচক্ষণতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব এবং সংকট মোকাবিলায় তার পারদর্শিতা আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তাই বাংলাদেশ ভূ-রাজনীতে প্রভাব ফেলার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে।

আওয়ামী লীগ সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধির পাশাপাশি বৈশ্বিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা দিন দিন উন্নত হচ্ছে। সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার মর্যাদা পেয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশ ব্রিকস ও জি-টুয়েন্টির শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও আমন্ত্রণ পেয়েছে। বৈশ্বিক জোটগুলোর সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বহুমুখী সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ। এই সম্মেলনে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান আরো দৃঢ় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব তাকে বিশ্ব দরবারে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে বাজিমাত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্কের, কানাডা, চীন, জাপান, নেদারল্যান্ডস, আর্জেন্টিনা, রাশিয়াসহ বিশ্বনেতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠকে বিগত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে চলমান সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, উন্নয়ন এবং সুশাসনসহ শেখ হাসিনা তার সরকারের মেয়াদকালে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের অভিজ্ঞতা বিশ্বনেতাদের কাছে উপস্থাপন করেন। বিশ্বনেতারাও প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ, তার বক্তব্য, বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ফুটে উঠেছে। বিশ্বনেতারা বারবারই বলছিলেন- উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে আজ আবির্ভূত হয়েছে; সেটিই আবার প্রমাণিত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেনের মতে, ভূ-রাজনীতিতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেরও গুরুত্ব বেড়েছে। গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সাফল্য রয়েছে। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বৈশ্বিক অঙ্গনে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ অনেক বেশি বিশ্বস্ত ও বন্ধুসুলভ রাষ্ট্র। কূটনৈতিক অঙ্গনে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ একটি উদীয়মান মধ্যম-পর্যায়ের শক্তি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব একটি বড় বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদানের মাধ্যমে এ বার্তাই উঠে এসেছে ও স্বীকৃত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের এই পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করছেন। এই নীতি দৃঢ়ভাবে ধারণ করে অর্থনীতিসহ বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার।