ইউএনজিএ সাইডলাইন

কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে, তিমুর-লেস্তের রাষ্ট্রপতি ড. হোসে রামোস হোর্তা ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে দ্বিপাক্ষিক সভা কক্ষে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর দৈনন্দিন ব্যস্ততা নিয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর একে আবদুল মোমেন বলেন, এতে বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও অপ্রসারণে বাংলাদেশের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার প্রথম মেয়াদে সরকার গঠন করার পর বাংলাদেশ পরমাণু অপসারণ চুক্তি ও ব্যাপক পরীক্ষা নিষেধাজ্ঞা চুক্তি অনুমোদন করে। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং সাভার নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার জন্য আইএইএ-কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ ও সিয়েরা লিওনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্পর্কে মোমেন বলেন, সিয়েরা লিওনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড জে ফ্রান্সিস কৃষি খাতের সার্বিক উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের প্রশংসা করেন। তিনি সিয়েরা লিওনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ কৃষি খাতের পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে সিয়েরা লিওনকে সহায়তা করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে (সিয়েরা লিওন মন্ত্রীকে) বলেছি কৃষি ছাড়াও আমরা উৎপাদন, ফার্মাসিউটিক্যালস ও আইসিটি ক্ষেত্রেও প্রচুর অগ্রগতি করেছি। আমরা সিয়েরা লিওনকে শুধুমাত্র কৃষিতে নয়, আইসিটি সেক্টরেও সাহায্য করতে আগ্রহী।’ ডেভিড জে ফ্রান্সিস সিয়েরা লিওনের এসব সেক্টরের উন্নয়নে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছেন। সিয়েরা লিওনের মন্ত্রী সেদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে কাজ করা বাংলাদেশি সেনাদের অবদানের জন্যও ধন্যবাদ জানান। এ প্রসঙ্গে মোমেন বাংলাকে আফ্রিকার দেশটির রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সিয়েরা লিওনের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব রয়েছে। সিয়েরা লিওনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশে বাংলাদেশ মিশন স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন।

মোমেন বলেন, এখন বাংলাদেশ আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণে কাজ করছে এবং সে অনুযায়ী অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওআইসি’র রোহিঙ্গা কন্টাক্ট গ্রুপের একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন এবং রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে ওআইসি সদস্যদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের আহ্বান জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট আমাদের একার সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। তিনি আরো বলেন, আমরা মানবিক ভিত্তিতে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু অন্যদের (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়)ও এখানে দায়িত্ব রয়েছে। যে দেশগুলো মানবিক ইস্যু ও মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার- তাদের এখানে অনেক বড় দায়িত্ব রয়েছে।’ ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ তাদেরকে প্রায়ই এই ইস্যু সমাধানের জন্য মিয়ানমারের উপর চাপ বজায় রাখতে বলে আসছে।