নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির শপথ ২৬ সেপ্টেম্বর

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শপথ গ্রহণ করবেন। ওই দিন সকাল ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন।

গতকাল সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি তারিখে নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসাবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং সংবিধান রচনার পর তাতে স্বাক্ষর প্রদান করেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতি বিষয়ে এমএসএস ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯১ সালে বিচারপতি হাসান নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে হংকং-এ অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ল’ইয়ারস কনফারেন্স’-এ অংশগ্রহণ করেন। গণচীনের প্রকিউরেটর জেনারেলের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের সফরসঙ্গী হিসেবে যান।

১৯৯৭ সালে চীনের বেইজিংসহ বেশ কিছু নগরী ভ্রমণ করেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ (পাঁচ) বছর দায়িত্ব পালন করেন।

এই সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগে অনেক সাংবিধানিক মোকদ্দমা পরিচালনা করেন।

বিচারপতি হিসেবে যোগদানের আগে তিনি দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং সাংবিধানিক বিষয়াদি সম্পর্কিত মোকদ্দমার একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন।

তিনি দীর্ঘদিন ধানমণ্ডি ল’ কলেজের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৯ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

তিনি ২০১২ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন এবং পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তার একমাত্র ছেলে আহমেদ শাফকাত হাসান আইনবিষয়ক একজন গবেষক। তিনি যুক্তরাজ্যের ইনার টেম্পল থেকে বার-এট-ল’ করার পর ইউনির্ভার্সিটি অব ডারহাম থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।

বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত। তার স্ত্রী নাফিসা বানু বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বোর্ডের সদস্য (অর্থ) হিসেবে কর্মরত আছেন।