টানা বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে ঢাবির কুয়েত-মৈত্রী হলের শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঢাবি প্রতিনিধি

গত বৃহস্পতিবার রাতের টানা ৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের নিচতলা। ফলে গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে হলটিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এর পাশে অবস্থিত ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য শাহনেওয়াজ হোস্টেলেও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।

সরেজমিন গতকাল বিকালে কুয়েত মৈত্রী হলে গিয়ে দেখা যায়, পুরো হলের নিচতলা পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে নিচতলাতে থাকা শিক্ষার্থীরা কেউ আশ্রয় নিয়েছেন রিডিং রুমে, কেউ কেউ আবার হল থেকে পাশের কারো পরিচিত আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। প্রায় সতের ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। এই হলের পাশে অবস্থিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব হলেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেও দুপুরের আগেই পানি নেমে যায়। শিক্ষার্থীরা জানান, রাত ৯টার পর থেকে হলের ভেতরে পানি প্রবেশ শুরু হয়। হল গেটে হাঁটু সমান পানি জমেছে। রাত ১১টায় হলের নিচতলার গণরুমগুলোতে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এ সময় হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে ওপরের তলায় বন্ধু বা সিনিয়রদের রুমে অবস্থান নেন। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তির মাত্রা আরো বেড়ে যায়।

দুর্ভোগের কথা জানিয়ে কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, নিচতলায় সব রুমে পানি ঢুকে গেছে, অফিসরুমেও পানি ঢুকে গেছে, প্রায় হাঁটু সমান পানি, ওয়াশরুমগুলো ডুবে যাওয়ায় নোংরা পানি মিশে গেছে, হলের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ব্লাস্ট হয়ে আগুন লাগায় বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করা হয়েছে, এখন হলে বিদ্যুৎ নেই। তানিয়া আক্তার বর্ণা বলেন, খুব বাজে অবস্থায় আছি। হলে পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই; নিচতলায় পানি। সবাই দিশেহারা কি করবে না করবে। আমি হলের ছাদে অবস্থান করছি। আমার জীবনেও কখনো এ রকম জলাবদ্ধতা দেখিনি। এ বিষয়ে পদক্ষেপ কি নেয়া হয়েছে, জানতে চাইলে মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুন নাহারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমরা বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে আপাতত অস্থায়ী বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করতেছি। আর পানি নিষ্কাশনের জন্য সিটি করপোরেশন টিম কাজ করতেছে। শিক্ষার্থীদের খাবারের পানির জন্য ওয়াসার গাড়িতে করে পানি পাঠানো হয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসনকে এসব সমস্যা সমাধানে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে টানা বর্ষণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনেক এলাকাই পানিতে তলিয়ে যায়। ভিসি চত্বর থেকে নীলক্ষেত রোড, শাহনেওয়াজ হোস্টেল, নিউমার্কেট এলাকা, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে হাঁটু সমান এবং স্থানভেদে কোমর পর্যন্ত পানি লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে কুয়েত মৈত্রী হল তুলনামূলক নিচু অবস্থানে হওয়ায় বেশি দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।