ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রূপরেখায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’

পাল্টে দেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের হিসাব-নিকাশ

পাল্টে দেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের হিসাব-নিকাশ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিশ্ব। প্রযুক্তি ব্যবহার ও উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা পৃথিবীকে আরো আধুনিক ও সমৃদ্ধ করে তুলছে। তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে সব কিছুই হয়ে যাচ্ছে সহজলভ্য। ইন্টারনেটের কল্যাণে মানুষ সবকিছু পেয়ে যাচ্ছে হাতের নাগালে। তথ্য-প্রযুক্তির স্পর্শে বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশও। ডিজিটাল যুগ পেরিয়ে আরো একধাপ এগিয়ে স্মার্ট হতে যাচ্ছে দেশ। ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’র রূপরেখায় পাল্টে যেতে পারে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের হিসাব-নিকাশ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবে ক্ষমতাসীনরা। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম নেতৃত্বকে আগামীতে সংসদে নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনা করছে দলটি। যে নেতৃত্ব বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে উন্নত-সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী দেশের কাতারে, সেই পরিকল্পনাই আঁটছে আওয়ামী লীগ।

২০০৮ সালে নির্বাচনি ইশতেহারে বাংলাদেশকে ডিজিটাল হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছিল দলটি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা দিয়েছে টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ। দেশ ডিজিটাল হওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন, কৃষি, চিকিৎসা, গণমাধ্যম, মহাকাশ ও সমুদ্র গবেষণাসহ সব ক্ষেত্রেই লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। বিশ্বায়নের সঙ্গে তালমিলিয়ে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশকে আরো এগিয়ে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে দলটি। এবার স্মার্ট বাংলাদেশের বিষয়টি মাথায় রেখে মনোনয়নের হিসাব কষছে আওয়ামী লীগ।

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ভিত্তি চারটি, এগুলো হচ্ছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’র মধ্যদিয়ে প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ও স্বচ্ছ একটা রাষ্ট্র গড়ার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের। যেখানে ভোগান্তি ছাড়াই প্রত্যেক নাগরিক সেবা পাবে, থাকবে সুশাসন। সরকারের কার্যক্রমের দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা থাকবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি রোধে জিরোটলারেন্ট নীতি গ্রহণ করবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার মধ্যদিয়ে মানুষের জীবনযাপন এবং কাজের পদ্ধতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বর্তমান এমপি-মন্ত্রীদের অনেকেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, অর্থনৈতিক অনিয়ম, পরের জমি ও সরকারি সম্পত্তি দখল, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ব্যক্তিরা। বিশেষ করে প্রযুক্তিবিদ, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, ক্রিড়াবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, উন্নয়নকর্মী, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক সমাজের কেউ-কেউ। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। চিন্তা-চেতনা ও কর্মপরিকল্পনার মধ্যদিয়ে যারা জনগণের সঙ্গে স্মার্টলি যোগাযোগ স্থাপন করবে। জনগণের দোড়গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিবে এবং উন্নত-সমৃদ্ধ ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বাংলাদেশ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে; তারাই স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সারথী হবেন। তাদেরই আগামীতে নৌকার প্রার্থী করার বিষয়ে গুরুত্ব দিবে দলটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে তরুণরা প্রধান্য পাবে। যাদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে, সমাজে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তারাই মনোনয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর দলীয় মনোনয়ন কাকে দেওয়া হবে বা হবে না, তা একান্তই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠিক করবেন। এখানে কারো হাত নেই। তবে দলের মনোনয়ন বোর্ড রয়েছে। মনোনয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, নাগরিকদের স্মার্টলি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে স্মার্ট নেতৃত্ব দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। দেশ অর্থনীতিতে সমৃদ্ধশালী হবে। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সারথী হবেন, তাদের চিন্তা-চেতনা, শিক্ষা-দীক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে স্মার্ট হতে হবে। তাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, নীতি-আদর্শ, জনগণের প্রতি ভালোবাসা, দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা থাকতে হবে। তারা সৎ-দেশ প্রেমিক হবেন। বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। জাতির পিতার সোনার বাংলা নির্মাণে তাদের কমিটমেন্ট থাকতে হবে। তারাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচিত হবেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, এরই মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের শুভ সূচনা হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্মার্ট নেতৃত্বেই স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ হবে। তিনি বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ সাধন করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবনমানে কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরবর্তী দাপ হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত