ভিসানীতি নিয়ে কারো পুলকিত হওয়ার কারণ নেই : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা এবং বহুমাত্রিক সম্পর্ক দিন দিন দৃঢ়তর হচ্ছে। সুতরাং কোনো একটা ভিসানীতি বা কিছু নিয়ে কারো পুলকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই নীতি তাদের বিরুদ্ধেই প্রযোজ্য হবে, যারা নির্বাচনে বাধা দেবে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ সেটিই প্রমাণ করে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ৯১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে মন্ত্রী এ কথা বলেন। সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজকে বিএনপি নানা ধরনের কথা বলে। ভিসানীতি ঘোষণার পর এক কথা বলে, আবার পত্রিকায় গত পরশু দিন খবর আসার পর আরেক ধরনের কথা বলে। এগুলো বলে কোনো লাভ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় বহু পরাশক্তি আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু সেইসব রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আমাদের পূর্বসূরী মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। আজকেও অনেকেই চোখ রাঙায়, অনেক দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র হয়। কিন্তু শেখ হাসিনার ধমনীতে, শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্তস্রোত প্রবাহমান, যে রক্ত পরাভব মানে না, আপস জানে না। সমস্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে দেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে।’ হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭১ সালে যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তাদেরই নতুন সংস্করণ হচ্ছে বিএনপি এবং তাদের সহযোগী হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, যারা দেশের স্বাধীনতার শুধু বিরোধিতাই করেনি, স্বাধীনতা সংগ্রামে এদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে অস্ত্রধারণ করেছিল। তাই এই বিএনপি-জামায়াত চক্র আজকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, আগামী নির্বাচনকে ভ-ুল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু, সমস্ত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে প্রত্যয় ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, সেই নির্বাচনে যদি বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসে আমরা স্বাগত জানাই। তবে কেউ না আসলেও কোনো অসুবিধা নেই। এই নির্বাচন আমাদের, এই দেশ আমাদের, এখানে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটি আমরা ঠিক করব। আমাদের কারো গণতন্ত্র শেখাতে হবে না। গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা আমরা জানি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।

বিপ্লবী প্রীতিলতা ও সূর্যসেন আজও দেশবিরোধীদের প্রতিরোধের অনুপ্রেরণা। ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী ও ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা থেকে স্বদেশভূমির স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গনকারী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রথম বাঙালি শহীদ নারী যিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে আত্মাহুতি দিয়েছেন। নিজের স্মৃতিচারণ করে চট্টগ্রামের সন্তান হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭১ সালে আমি মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকা দেখেছি। মায়ের আঁচলের নিচে বসে স্লোগান শুনেছি ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’। সেই স্লোগানেই আমার কচি রক্তে আগুন ধরেছে। ইচ্ছা হতো মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেই। নানার বাড়িতে গল্প শোনতাম যে, প্যালেস্টাইনে কীভাবে শিশুরা বুকে মাইন পেতে ট্যাঙ্ক উড়িয়ে দিত। সেই গল্প শুনে সেরকমই আত্মাহুতি দেওয়ার ইচ্ছা জাগত। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে আমি যেতে পারিনি। বয়স আমার প্রতিবন্ধক ছিল।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের সংগীতশিল্পী মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল ও ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।