ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

২৮ অক্টোবর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে শিগগিরই শুরু হচ্ছে ট্রায়াল রান

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে শিগগিরই শুরু হচ্ছে ট্রায়াল রান

নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ একেবারে শেষ দিকে। মাত্র ৫ কিলোমিটার নির্মাণ বাকি আছে। এটির নির্মাণ শেষ হলেই ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ শেষ হবে। এরই মধ্যে ট্রায়াল রানের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে একটি ট্রেন। চট্টগ্রামের পটিয়া রেল স্টেশনেই ট্রেনটি রাখা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রায়াল রান শুরু হবে বলে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে কালুরঘাট সেতু মেরামত কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। তাই ট্রেন চলাচল নির্ধারিত সময়ে হবে কি না, সংশয় কাটছে না। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ আগামী মাসে ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য পটিয়া স্টেশনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ছয়টি বগি ও ২ হাজার ২০০ সিরিজের একটি ইঞ্জিন। তবে অক্টোবরেই ট্রেন চলাচল শুরুর যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। আগামী ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। এ ব্যাপারে রেললাইনের প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য বড় ধরনের কোনো বাধা নেই। অর্থাৎ, প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজই শেষ। ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৯৫ কিলোমিটারে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৯০ শতাংশ। বাকি কাজ আগামী ছয় মাসের মধ্যে শেষ হবে। তবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হবে। ছয়টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটি স্টেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে ছয়টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটি স্টেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। প্রকল্প কর্মকর্তারা বলেন, হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প কাজে বহু কালভার্ট সেতু ও নির্মাণ করা হয়েছে। মোট ৩৯টি বড় সেতু, ২৪২টি কালভার্ট ও ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৯টি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ছয়টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটি স্টেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। সব কটি স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। এ ধরনের সিগন্যালের কারণে ট্রেন চলবে নির্বিঘ্নে। কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই। জানা গেছে, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার প্রায় ৭ বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৯২ কিলোমিটার অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে রেল লাইনের দুই পাড়ের লোকজনের দাবি বেড়েই চলেছে। গত শনিবার চট্টগ্রাম নগরীতে জেলা প্রশাসকের সাথে একমতবিনিময় সভায় দাবি তোলা হয়- সাতকানিয়ার কেরানিহাটে একটি স্টেশন স্থাপনের জন্য। এতে ঢাকা-কক্সবাজার পথে চলাচলকারী লোকজন খুব সহজে বান্দরবান ঘুরে আসতে পারবেন। বান্দরবানের পর্যটন সম্ভাবনাও বাড়বে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অবহিত করতে অনুরোধও করা হয়। পাশাপাশি এলাকার লোকজন বর্ষা মৌসুমে বন্যা পরিস্থিতি এড়াতে আরো বেশিসংখ্যক কালভার্ট সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এতে ভবিষ্যতে ভারি বর্ষণে জানমালও রক্ষা পাবে। হাজার কোটি টাকায় নির্মিত ট্রেন লাইনের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত