ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে ডগ স্কোয়াড

বাড়বে কাজের গতি, জোরদার হবে বহুমুখী নিরাপত্তাব্যবস্থা

বাড়বে কাজের গতি, জোরদার হবে বহুমুখী নিরাপত্তাব্যবস্থা

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) গতিশীলতা আনতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসাবে শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে ডগ স্কোয়াড (কে-৯ ইউনিট)। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাব ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট হেডকোয়ার্টারের পর সিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে এটি। প্রাথমিকভাবে ১০টি প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে এ ইউনিট চালু করতে যাচ্ছে সিএমপি। সিএমপির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ডগ স্কোয়াড যুক্ত হলে কাজের গতি বাড়বে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ে অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা ক্ষেত্রে ডগ স্কোয়াড কাজে লাগবে। জোরদার হবে বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই স্কোয়াড সক্রিয় থাকলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি মাদক, বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানেও সাফল্য বাড়বে। কারণ মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে ডগ স্কোয়াড বেশ ভালো ভূমিকা রাখছে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ডগ স্কোয়াড যুক্ত করার কথা হচ্ছে সিএমপিতে। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়। বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানায় সিএমপি। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর সিএমপির সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামীমুর রহমান স্বাক্ষরিত পুলিশ সদরদপ্তরে পাঠানো এক চিঠিতে আট কারণে এখানে ডগ স্কোয়াড গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা, হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার, ভিভিআইপির নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিস্ফোরক শনাক্ত করতে অভিযান পরিচালনা, তারকাবিশিষ্ট হোটেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত, স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। চট্টগ্রাম, মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা জানান, ডগ স্কোয়াডের প্রয়োজনীয়তা এখন স্বীকৃত। বেশ ভালো ফল মিলছে এই স্কোয়াডের মাধ্যমে। চট্টগ্রামে এই স্কোয়াডের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে। এখানে আছে বিমানবন্দর, টানেলসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এসব স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদারে ডগ স্কোয়াড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ডগ স্কোয়াড গঠনের জন্য এরইমধ্যে ১০টি প্রশিক্ষিত বিদেশি কুকুর নেদারল্যান্ডস থেকে কেনা হয়েছে। সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অধীনে এ স্কোয়াড পরিচালিত হবে। ডিএমপির কে-৯ ইউনিটের অধীনে পরিচালনার কাজে নিয়োজিত ২০ জন পুলিশ সদস্য এরইমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারা ডগ স্কোয়াড বেশ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করবে বলে আশা করছি।

ডগ স্কোয়াড কার্যক্রম শুরু করতে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। নগরীর মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয় এলাকায় ডগ স্কোয়াডের জন্য একটি দুই তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসে এ ভবনের কাজ শেষ হবে। ভবনের কাজ পরিপূর্ণ হওয়ার পরপরই কুকুরগুলো ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হবে। শুরু করা হবে স্কোয়াডের কার্যক্রম। কুকুরগুলো পরিবহণের জন্য একটি গাড়ি নেওয়া হচ্ছে। পরে আরেকটি গাড়ি নেওয়া হবে। এসব প্রশিক্ষিত কুকুর মাদকদ্রব্য ও বিস্ফোরক উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। প্রথমে ১০টি দিয়ে সিএমপিতে ডগ স্কোয়াড শুরু হবে। পরে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে। ডগ স্কোয়াড যুক্ত হলে মাদক উদ্ধারে গতি বাড়বে। যে দশটি বিদেশি কুকুর কেনা হয়েছে এর মধ্যে চারটি কুকুর বিস্ফোরক শনাক্তে এবং ছয়টি কুকুর মাদক শনাক্তে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত। একটি কুকুর পরিচালনায় দুজন করে দশটির জন্য ২০ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এর বাইরেও এসব কুকুর দেখভালের জন্য আরো জনবল প্রয়োজন হবে।

জানা গেছে, ডগ স্কোয়াড সংশ্লিষ্ট সিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি কুকুরের জন্য দৈনিক এককেজি মুরগির মাংস, ৭০০ গ্রাম গরুর মাংস এবং ২৫০ গ্রাম ভাতসহ অন্যান্য খাবার দিতে হবে। স্কোয়াডে যুক্ত হওয়া কুকুরগুলো অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। বিশেষ করে ঘ্রাণের মাধ্যমে এসব কুকুর মাদক, বিস্ফোরকদ্রব্য ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সিএমপিতে ডগ স্কোয়াড চালু হলে অবশ্যই অপরাধ দমনে আরো সক্ষমতা বাড়বে। এমনকি বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা কোনো ব্যক্তির লাগেজে সোনা কিংবা চোরাচালান আছে কি না তাও বের করতে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত