ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বাস্তবতা

স্মার্ট ইশতেহার প্রণয়ন করছে আওয়ামী লীগ

স্মার্ট ইশতেহার প্রণয়ন করছে আওয়ামী লীগ

ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে ইশতেহার প্রণয়নের কাজ শুরু করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বাস্তবতায় স্মার্ট বাংলাদেশ নিমার্ণে ইশতেহার প্রণয়নের কাজ করছে দলটি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার থাকছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখায় তরুণ-যুব সমাজের জন্য চমক থাকবে এই ইশতেহারে। প্রযুক্তিনির্ভর নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি বিষয়টি অগ্রধিকার পাবে। এছাড়া গুরুত্ব পাবে কৃষি, সেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও শিল্পোৎপাদন খাত। থাকবে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যাপক কর্মসূচি। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল থাকবে আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে। তবে এবারের ইশতেহার হবে স্মার্ট ও সংক্ষিপ্ত আকারে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটি আহ্বায়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ শুরু করেছিলাম। আজ সারাদেশে ইন্টারনেট সুবিধা ছড়িয়ে গেছে। সবাই এর সুবিধা পাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপট সামনে রেখে আগামী দিনে আমাদের অর্থনীতিকে কীভাবে টিকিয়ে রাখব এবং বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকব, এগুলো আমাদের চিন্তা করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ ছিল, এবার আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা ভাবছি। এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে আসবে।

এদিকে ইশতেহার প্রণয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের কাছ থেকে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়নে জনগণের মতামতেরও প্রধান্য দিতে চাচ্ছে দলটি। ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এ সম্পর্কে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে মতামত চেয়ে এরই মধ্যে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্যসচিব এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ গণবিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার প্রণয়নের কার্যক্রম শুরু করেছে। এই উপকমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের ইশতেহার কেবলমাত্র একটি দলীয় ইশতেহার নয়। এটি প্রকৃত অর্থে গোটা জাতির ইশতেহার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন খাত সম্পর্কে ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে এবং আবারো সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগ কী কী নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে এ বিষয়ে আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে মতামত প্রেরণের জন্য দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং কমিউনিটি লিডারদের অনুরোধ করা যাচ্ছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী একমাত্র রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের সকল অর্জন আওয়ামী লীগের হাত দিয়েই এসেছে। শুধু স্বাধীনতা অর্জন কিংবা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নয়, রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব চিরস্থায়ী টেকসইকরণ এবং এর অর্থনীতির ভিত্তিমূল জাতির পিতা তৈরি করে গেছেন। জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা ও মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পথনকশা ও নির্দেশনা তিনি নিয়ে গেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এই পথনকশা ও নির্দেশনা বাস্তবায়নে তার চার মেয়াদে দেশে যুগান্তকারী উন্নয় সাধন করেছেন। পিতার পর কন্যার হাত দিয়েই জাতির ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার প্রতিটি নির্বাচনী ইশতিহারে জাতিকে প্রদত্ত প্রতিটি অঙ্গীকার শতভাগ প্রতিপালন করেছে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইশতেহারেই সরকারের নির্দিষ্ট মেয়াদের বাইরে দীর্ঘমেয়াদি নানা উন্নয়নের পথনকশা ছিল। এর প্রতিটিই অত্যন্ত সুচারুভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। মতামত প্রেরণের ঠিকানা সদস্য সচিব, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়, সড়ক- ৩/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা। জানা গেছে, এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ স্লোগানে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। ওই ইশতেহারে ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালে নিরাপদ ব-দ্বীপ পরিকল্পনার রূপরেখা দেওয়া হয়েছিল। ‘রূপকল্প ২০৪১’কে ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১; স্মার্ট ডেল্টা বিনির্মাণে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’, নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২৬-২০৩০, দশম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩১-২০৩৫, একাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩৬-২০৪০-এর বিস্তারিত থাকবে এবারের ইশতেহারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত