ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের

কোনো বিদেশি শক্তির ইচ্ছায় দেশের নির্বাচন হবে না

কোনো বিদেশি শক্তির ইচ্ছায় দেশের নির্বাচন হবে না

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,

বাংলাদেশের নির্বাচন, গণতন্ত্র ও রাজনীতির গতিপথ কোনো বিদেশি শক্তির ইচ্ছায় নির্ধারিত হবে না; একইভাবে দেশবিরোধী কোনো অপশক্তির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির হুমকির মুখে বিচ্যুত হবে না।

গতকাল দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে সুমহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির সীমাহীন আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, কষ্টার্জিত গণতন্ত্র, উন্নয়ন-অগ্রগতির চলমান অভিযাত্রা, জনগণের ভোটাধিকার, আইনের শাসন ও দেশের জনগণের স্বার্থ সুরক্ষায় যে কোনো ধরনের আত্মত্যাগে প্রস্তুত রয়েছে।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী বিএনপির মুখে আজ গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা- যা শুনে ঘোড়াও ডিম পাড়ে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই দেশের জনগণের সঙ্গে তামাশা করে আসছে। অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপি ঐতিহ্যগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা-গণতন্ত্র সংবিধান ও নির্বাচনবিরোধী একটি রাজনৈতিক দল।

স্বাধীন বাংলাদেশে বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করে। দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে মার্শাল ল জারির মাধ্যমে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র’ প্রবর্তন করে। মার্শাল ল বলবৎ থাকাবস্থায় ১৯৭৭ সালের ৩০ মে তথাকথিত হ্যাঁ/না ভোট, ১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। সে সময় একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক পদে থেকেই জিয়াউর রহমান প্রহসনের মাধ্যমে সব নির্বাচনে নিজের বিজয় নিশ্চিত করে।

এমনকী জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপি নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারকে পদে বহাল রেখেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার জন্য দেশের পবিত্র সংবিধান সংশোধন করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় থাকাবস্থায় প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে বিএনপির আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের নিয়ে সাদেক আলী ও আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন করে। নির্বাচন কমিশনে ছাত্রদলের চিহ্নিত ক্যাডারদের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে নির্বাচন কমিশনকে একটি দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ বিএনপি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার জন্য মায়াকান্নার মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে করুণা ভিক্ষা করছে।

দেশবাসী ভুলে যায়নি, ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)-এর গবেষণা ও তদন্তে বিএনপির ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টির জালিয়াতি উন্মোচিত হয়। ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে কলুষিত করে ২০০৬ সালে তাদের দলীয় রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অপচেষ্টা চালায় এবং জনগণের আন্দোলনের মুখে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করতে বাধ্য হয়। বিএনপি বরাবরই হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র ও রক্তপাতের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে। তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির অন্তরালে বিএনপি পুনরায় হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন। জনগণের রায় ছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেনি। স্বাধীন বাংলাদেশে একমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাই সাংবিধানিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান এবং গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেজন্য বাংলার জনগণ ভালোবেসে তাকে ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’ অভিধায় অভিষিক্ত করেছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত