‘হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতা স্বীকার’

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে। এরই মধ্যে হামাসের হামলায় ১ হাজার ৩০০-এর বেশি ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই যুদ্ধে গাজায় ১ হাজার ৩৫৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো শত শত মানুষ। গতকালও উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত থাকে। এদিকে হামাসের হামলা ঠেকাতে ভূমি থেকে হামলা পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। অন্যদিকে সংঘাত দীর্ঘ করতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে হামাস। এদিকে হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান। তিনি জানিয়েছেন, গেল ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর দোষ ছিল। ইসরাইলি সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, ‘ইসরাইলের সেনারা নিজ ভূখণ্ড ও তার নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য দায়ী।’ তিনি বলেন, গত শনিবার সকালে গাজার আশপাশের এলাকায় যা ঘটেছে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্তও করব। কিন্তু এখন যুদ্ধের সময়। তাই, এখন আমরা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। গতকাল ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের হালনাগাদ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে গাজা সীমান্ত লাগোয়া ইসরাইলের ভূখণ্ডজুড়ে ইসরাইলি কোনো সম্প্রদায় নেই। তাদের সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হ্যাগারি বলেন, হামাসের যোদ্ধারা এখনো ওই অঞ্চলের ভেতরে আছেন কি না, তা জানতে জরিপ করছেন ইসরাইলি সৈন্যরা।

গত বুধবার জিকিম এলাকায় হামাসের সদস্যদের সঙ্গে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, পুরো যুদ্ধের যেকোনো দৃশ্যপটের ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। চলমান যুদ্ধে ১৮৬ ইসরাইলি সৈন্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামাসের সদস্যরা ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ৬০ সৈন্যকে জিম্মি করেছেন। হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজা সীমান্তের কাছে তিন লাখ সেনা জড়ো করেছে ইসরাইল। ধারণা করা হচ্ছে, তারা যেকোনো সময় গাজার ভেতর ঢুকে স্থল হামলা শুরু করতে পারে। ইসরাইলের সেনাবাহিনী গাজার কাছে সেনা ছাড়াও অসংখ্য ট্যাংক, কামান ও সামরিক বুলডোজার জড়ো করেছে। তবে ইসরাইল সেনাদের জড়ো হওয়া এবং গাজায় হামলা নিয়ে হামাস শঙ্কিত নয় বলে জানিয়েছেন, স্বাধীনতাকামী এ গোষ্ঠীর নেতা গাজী হামাদ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমরা ভয় পাই না। আমরা শক্তিশালী মানুষ। এই অভিযান অব্যাহত রাখতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও পানি সরবরাহ করার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের

ইসরাইলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় জীবন রক্ষাকারী খাদ্য, জ্বালানি ও পানি সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। গতকাল এক্স-এ (সাবেক টুইটার) তিনি এই আহ্বান জানান। জাতিসংঘ মহাসচিব লিখেছেন, গাজায় জীবন রক্ষাকারী উপাদান যেমন- খাদ্য, জ্বালানি ও পানি সরবরাহ করতে হবে। গত শনিবার সকালে হামলা শুরুর পর থেকেই ইসরাইল গাজায় সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে ওষুধ ও খাবারও রয়েছে। গাজায় এখন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন। খুব শিগগিরই তারা জরুরি খাবার ও পানির সংকটে পড়বে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ বিভিন্ন সংস্থার ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা, ইন্টারনেট