রাজধানীর ১১টি স্থানে মানববন্ধন

আজ ১০টা থেকে ১ মিনিট ‘শব্দহীন’ কর্মসূচি

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর অন্তত ১১টি স্থানে ১ মিনিট ‘শব্দহীন’ কর্মসূচি পালন করা হবে। শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতেই আজকের এই ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। গত ১২ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ। তিনি বলেন, আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে ‘১ মিনিট শব্দহীন’ কর্মসূচি পালন করা হবে। ‘শব্দদূষণ বন্ধ করি, নিরব মিনিট পালন করি’ স্লোগানে ঢাকা শহরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ কথা জানিয়ে সচিব বলেন, এ কর্মসূচি সফল করতে রাজধানীর ১১টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে, শাহবাগ মোড়, উত্তরা, বিজয় সরণী মোড়, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর, গাবতলী, মগবাজার, মহাখালী, গুলশান-১, কমলাপুর, বৌদ্ধমন্দির ও যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে। ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল-কলেজের স্কাউট সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহণ মালিক সমিতির সদস্যরা ব্যানার, ফেস্টুনসহ উপস্থিত থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলেও জানান তিনি।

পরিবেশ সচিব বলেন, এ কর্মসূচি থেকে গাড়ি চালকদের মধ্যে শব্দ সচেতনতামূলক লিফলেট, স্টিকার বিতরণ এবং ১ মিনিট হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হবে। তিনি আরো বলেন, শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অতিমাত্রায় শব্দদূষণের কারণে কানে কম শোনা, আংশিক বা পুরোপুরি বধিরতা, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, অনিদ্রা এবং মনোসংযোগ নষ্টসহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যা, গর্ভবতী মায়েদের অকাল গর্ভপাত, গর্ভে থাকা সন্তানের বধির বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। শব্দদূষণের ফলে দেশের মানবসম্পদ তথা সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশবাসীকে মুক্ত রাখার জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবহণ চালক, কারখানা ও নির্মাণ শ্রমিক, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, ইমাম, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। শব্দ সচেতনতামূলক থিম সং, টিভিসি, রেডিও ড্রামা ও ডকুমেন্টারি নির্মাণ ও প্রচার করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার প্রচারণার কাজ চলমান রয়েছে। শব্দ সচেতনতামূলক বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপন, লিফলেট, স্টিকার, মূদ্রণ ও বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। নিয়মিতভাবে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা যুগোপযোগীও করা হচ্ছে বলে জানান সচিব। বর্তমানে ঢাকা শহরের শব্দদূষণ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে জানিয়ে পরিবেশ সচিব বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে সচিব জানান, শব্দ দূষণের উৎস আমরা চিহ্নিত করেছি। শব্দদূষণের প্রধান খাত হিসেবে পরিবহণ খাতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গাড়ি চলাচল ও অযথা হর্ন বাজানোয় শব্দদূষণ হচ্ছে। নির্মাণ খাত, কলকারখানা থেকেও শব্দদূষণ হচ্ছে। পরিবহণ খাত থেকে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হওয়ায় বিআরটিএ ও বিআরটিসির সঙ্গে পরিবেশ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।