ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনি ডামাডোলে দুর্গোৎসব

সুযোগ নিতে পারে যে কোনো অপশক্তি

প্রাসঙ্গিক ভাবনা
সুযোগ নিতে পারে যে কোনো অপশক্তি

আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করবেন। অন্যবারের তুলনায় এ বছরের দুর্গাপূজা অনেকটা স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল। কেন না, আগামী মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে জানুয়ারির শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কোনো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে আওয়ামী লীগবিরোধী মহলটি সুযোগ সন্ধানী হয়ে ওঠে। তারা ক্ষমতাসীন এই দলটিকে বেকাদায় ফেলার জন্য সাম্প্রদায়িক নানা অপকর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। আর তার মাশুল দিতে হয় আওয়ামী লীগকে। কেন না নির্বাচনের সময় প্রার্থীদের ভোটারের মুখোমুখি হতে হয়। কোনো কারণে ভোটার ক্ষুব্ধ হলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় জনগণের মনোজগতে। প্রায় ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, এ সময় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে কোনো কোনো অপশক্তি তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চালিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগকে জনগণের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হলেও ক্ষতটা এখনো রয়ে গেছে। সে কারণে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বরা উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল এবং এই দলের প্রধান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দলমত নির্বিশেষে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সব ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করেন বলে মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। আর বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ দেশের সব ধর্মের মানুষ আজ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার মহান দায়িত্ব পালনে সক্রিয় অংশীদার। আগামীতেও এই সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় না থাকলে, দেশ আবার পাকিস্তানি ভাবধারার সঙ্গে একাকার হয়ে যাবে- এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সে কারণে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো দল ক্ষমতায় এলে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা কী ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন, সেটা ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এ দেশের মানুষ অবলোকন করেছে। তৎকালীন বিএনপি সরকারের অভিযোগ ছিল এ দেশের হিন্দু ভোটার ধানের শীষে ভোট দেয়নি। সে কারণে তাদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের খড়গ নেমে এসেছিল। মায়ের সামনে মেয়েকে পাশবিক অত্যাচার করার নজির বিএনপির আমলে সৃষ্টি হয়েছে। আদর্শিক দিক দিয়ে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল। এই দলের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের জনগণকে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু হিসেবে বিবেচনায় না নিয়ে সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’- এ স্লোগান একমাত্র আওয়ামী লীগের। সব ধর্মের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে তাদের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করেন। এ সময় তাদের খোঁজখবর নেন। তাদের সমস্যার কথা শোনেন এবং তা সমাধানের ব্যবস্থা করেন। এ দেশটা সব ধর্মের মানুষের- এই আস্থা এ দেশের মানুষ পোষণ করে কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে। তবে তার মধ্যেও কোনো কোনো অপশক্তি সযোগ খুঁজতে থাকে। বিশেষ করে দুর্গাপূজার মতো একটি প্রধান উৎসবের সময়। কোনো জাতীয় নির্বাচনের আগে অনেকেই প্রার্থী হতে আগ্রহী হন এবং তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য নানা রকম অপকৌশল অবলম্বন করেন। সেই সুযোগটি দুর্গোৎসব চলাকালে হয়তো কেউ কেউ গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া দুর্গাপূজার সময় ছদ্মবেশে অন্য কোনো ধর্মের লোক বিশেষ করে যারা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সাফল্যকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারছেন না, তারাও হয়তো সুযোগ খুঁজবে। আদর্শিক কারণে এ দেশের অধিকাংশ হিন্দু ভোট আওয়ামী লীগ পেয়ে থাকে। আর সে কারণে দুর্গাপূজার সময় যদি কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনার অবতারণা করা যায়; তাহলে তারা বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত তুলে ধরার সুযোগ পাবে। এবারের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতায় কালিমা লেপন করে তার দায় সরকারের ওপর চাপানোর চেষ্টায় নেমেছে একটি চিহ্নিত মহল। তাদের অপতৎপরতা রুখে দিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয়ভাবে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। মাত্র কয়েকটা দিন প্রতিটি পূজামণ্ডপ ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা পূজামণ্ডপকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না। এবারের দুর্গাপূজা সফলভাবে সম্পন্ন করার মধ্যদিয়ে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তী আরো বাড়বে। আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাদের দুর্গাপূজার কয়েকটা দিন এলাকায় গিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে হবে। পূজা মণ্ডপগুলো বার বার পরিদর্শন করলে কোনো অপশক্তি কোনো প্রকার নাশকতা সৃষ্টি করার সুযোগ পাবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতে দেশটা গুজবের ওপর ভাসছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে। ফলে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। পূজার কয়েকটা দিন সামাজিক গণমাধ্যমের ওপর কঠোর নজরদারি জোরদার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন এমন উদ্ভট খবর প্রকাশিত হচ্ছে যা সরল প্রকৃতির মানুষ সহজেই বিশ্বাস করছেন। পূজামণ্ডপ পাহারার দায়িত্ব এবার আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যারে নেতাকর্মীদেরও নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে, এটা তাদের দায়িত্ব। একজন বিচারপতি যদি সাংবিধানিক শপথ নিয়ে মহান আদালতে বসে দেশকে জাহান্নামের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতির কারণে এ বছরের পূজার সময় কোনো আলোচিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, সেই আস্থা তৈরি হয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে আওয়ামীলীগ বার বার কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখে হয়ে টিকে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একবার নয়, দুইবার নয় ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সরকারি পৃষ্টপোষকতায় ২০০৪ সালে ২১শে আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল সেই হামলার উদ্দেশ্য ছিল দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের হত্যা করার মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। জনগণের সেবা করতে হলে জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হবে। তাদের জীবনাচারণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। তাহলেই মানুষের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি হবে এবং ভোটাররা ভোট দেবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে মানুষের রায় অর্জন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদীয় এলাকায় বিএনপির প্রার্থী জামানত হারান। অথচ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থানকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হয়ে তিনি যেভাবে জনগণের সঙ্গে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন, সেভাবে আওয়ামী লীগের নেতাদেরও জনগণের সঙ্গে একাকার হয়ে যেতে হবে। তাহলেই আসন্ন দুগোৎসব সবার জন্য প্রাণবন্ত হবে। তবে স্বস্তির জায়গা হচ্ছে আপামর বাঙালি সাম্প্রদায়িক নয়। এদেশে সবাই মিলে মিশে একাকার। সেই কারণে এদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাঝেমধ্যে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করলেও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেই অপশক্তি অবদমিত হয়েছে। তবে সেই অপশক্তি নির্মূল হয়নি। যখন নির্বাচন আসে, তখন এই অপশক্তি ফণা তোলার অপচেষ্টা চালায়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব সম্প্রদায়ের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতে ৩০ লাখ শহীদ ও ও ২ লাখ মা-বোনের সভ্রম হানির বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তবে আজো সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আমাদের দেশে আছে এবং তারা সময়ে সময়ে তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়। ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের যে মূল চেতনা হারিয়ে গিয়েছিল তা ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা চলছে। মানুষের সামর্থ্য ও সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বিধানের কারণে প্রতি বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছে। হিন্দু ধর্মীয় নেতারা বলেছেন, নির্বাচন ও ধর্মীয় উৎসব ঘিরে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। আমরা দুর্গাপূজা বা ধর্মীয় উৎসবের সময় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা মেনে নিতে পারি না। এ বছর সারা দেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ৩২ হাজার ৪০৭টি। রাজধানীতে ২৪৪টি বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

বেদনাদায়ক বিষয় হচ্ছে, বিগত দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও পূজার সময় হামলা-ভাঙচুরের মতো ঘটনা যাতে আর ঘটতে না পারে, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে উন্নতি ঘটেছে; সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসবই ধ্বংস করতে চায় মৌলবাদী জনগোষ্ঠী। আসলে মুসলিমদের সঙ্গে হিন্দু ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে ফায়দা লুটতে চায় কেউ কেউ। ২০২১ সালে ১৩ অক্টোবর অষ্টমীপূজার দিন কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত মানুষ মণ্ডপ ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে ২১ অক্টোবর কক্সবাজার থেকে আটক করে পুলিশ। কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধপল্লিতে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে গুজবের সূত্র ধরে রামুর ১২টি বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধপল্লির ২৬টি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল। পরের দিন একই ঘটনার জের ধরে উখিয়া-টেকনাফে আরো সাতটি বৌদ্ধ বিহার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যে ফাটল দেখা দেয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দ্রুত সময়ে দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধবিহার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত