ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসছেন ইইউয়ের চার প্রতিনিধি

ইইউ রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আ.লীগের বৈঠক
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসছেন ইইউয়ের চার প্রতিনিধি

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চার সদস্যবিশিষ্ট অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী মাসে পর্যবেক্ষক দলটি বাংলাদেশে আসবে এবং নির্বাচন শেষ করে দেশ ত্যাগ করবে।

গতকাল দুপুরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসভবনে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইইউভুক্ত ১০টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগকে বিষয়টি জানিয়েছেন ইইউয়ের ১০ দেশের প্রতিনিধিরা।

বৈঠক শেষে নির্বাচনে ইইউয়ের পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান। তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য ইইউ ছোট আকারের এক্সপার্ট গ্রুপ পাঠাবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ‘ভালো বৈঠক হয়েছে’ উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, বৈঠকের শুরুতেই তারা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক; এটা একটা চমকপ্রদ ব্যাপার। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে আমাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ চুক্তি হবে। এই কথাগুলো তারা শুরুতেই উল্লেখ করেছেন।

দেড় ঘণ্টার মতো বৈঠক হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বৈঠকে মূলত আলোচনা হয়েছে- আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কী পরিসরে, কী চিন্তায় অগ্রসর হচ্ছে? আমরা তাদের বলেছি যে, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী কিছু দিনের মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে। তারপর নির্বাচন কমিশন ভোটের শিডিউল (তফসিল) ঘোষণা করবে এবং তারপর আমরা সেই মোতাবেক নির্বাচন করব।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেনুফেস্ট কী হবে, সেটাও ইইউ সদস্যরা জানতে চেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা তাদের ব্যাখ্যা করেছি আমাদের মেনুফেস্টে সাধারণত দুইটি অংশ থাকে। প্রথম অংশে গত নির্বাচনে যে মেনুফেস্ট দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমাদের যে কমিটমেন্টগুলো ছিল, সেটা আমরা কতদূর পূরণ করতে পেরেছি, তা আমরা জনগণকে জানাব। পরের অংশে আগামী ৫ বছরে আমরা কী করতে চাই, এটা জানাব। এই লক্ষ্যে সব অংশীদারদের নিয়ে এরইমধ্যে একটা বৈঠক করা হয়েছে, তারা কাজ করছেন। কিছুদিনের মধ্যেই এটা শেষ হলে তা আওয়ামী লীগের সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে প্লেস করা হবে। সেখানে এটা অনুমোদন পেলে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সবাইকে জানানো হবে।

এ ছাড়াও দেশের আগামী ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ নিয়ে আওয়ামী লীগ কী চিন্তা-ভাবনা করছে; তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ফারুক খান। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা নিয়ে আমরা কী চিন্তা-ভাবনা করছি, দেশের অন্যান্য ডেভেলপমেন্ট নিয়ে, ইকোনমিক ক্রাইসিস নিয়ে আমরা কী চিন্তা-ভাবনা করছি- এই বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে, আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, আমাদের মধ্যে আজ যে আলোচনা হয়েছে, তাতে প্রমাণ হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং সেই নির্বাচনের কথাই আমরা বলি।

সুষ্ঠু নির্বাচন এবং তাতে আওয়ামী লীগ কী কী করবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে ফারুক খান বলেন, বিএনপির কথা নিয়ে আমরা শুধু এতটুক বলেছি যে, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। আশা করি, তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- না, সংলাপের কোনো কথা হয়নি।

ফারুক খান বলেন, তারা প্রশ্ন করেছে, আগামী নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করলে দেশটাকে কোন দিকে, কীভাবে চালাব? তার জবাবে বলেছি সেটার উত্তর আপনারা আমাদের মেনুফেস্টেই পাবেন। আমাদের মেনুফেস্টেই তো লেখা থাকবে, আগামী ৫ বছর বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, ডেমোক্রেসিকে কীভাবে এক্সটেন্ড করা হবে, জুডিশিয়াল সিস্টেমকে কীভাবে এক্সটেন্ড করা হবে, কীভাবে আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ব; এসব কথা আমাদের ইলেকশন মেনুফেস্টে থাকবে।

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, নির্মল চ্যাটার্জী, আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য সোহরাব হোসেন, তারিক হাসান সমী ও খালেদ মাসুদ আহমেদ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত