ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী

আগামী একশ’ দিন রাষ্ট্র পাহারা দিতে হবে

আগামী একশ’ দিন রাষ্ট্র পাহারা দিতে হবে

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানাই, সংস্কৃতি কর্মীদেরও অনুরোধ জানাই, আগামী ১০০ দিন রাষ্ট্র পাহারা দিতে হবে। কারণ বিএনপি দেশটাকে বিশ্ববেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে। ক্ষমতা পাহারা দিতে হবে না, ক্ষমতার পাহারাদার জনগণ কিন্তু রাষ্ট্র পাহারা দিতে হবে।

গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজকে দেশকে নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত বিশ্ববেনিয়াদের হাতে দেশটাকে তুলে দিতে চায়। তাদের লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয়, কারণ তারা জানে নির্বাচন হলে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভবপর নয়। আর তারা যে পানিটা ঘোলা করার চেষ্টা করছে সেখানে তারা নয়; মাছ শিকার করবে অন্যরা, সেটিও তারা জানে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা আর বিশ্ববেনিয়াদের হাতে দেশ ও দেশের সম্পদ তুলে দেওয়া। আর বিশ্ববেনিয়ারা শকুনের মতো তাকিয়ে আছে সুতরাং সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। ফিলিস্তিনের কথা উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমি অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম, যে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন এলেই ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি করে, জামায়াত তো করেই, অথচ আজকে ফিলিস্তিনে পাখি শিকারের মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, সে নিয়ে তাদের মুখে একটি কথা নাই। আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, তারেক জিয়া নির্দেশ দেয় যে এটি নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নাই, বিশ্বমোড়লরা অখুশি হতে পারে। বিশ্বমোড়লরা অখুশি হতে পারে সেজন্য যারা একটি শব্দও উচ্চারণ করে না তারা যদি সুযোগ পায় নিজেদের স্বার্থে দেশটাকেই বিক্রি করে দেবে। সুতরাং, এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আমি মির্জা ফখরুল সাহেবদের অনুরোধ জানাব, আপনারা বেগম জিয়া, তারেক রহমানের লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার হিসেবে কাজ করবেন না, রাজনীতিবিদ হিসেবে কাজ করুন, দেশের স্বার্থে কাজ করুন, তাহলে দেশ উপকৃত হবে। মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব, অতো উঁচু গলায় কথা বলবেন না। আপনি এমপি হওয়ার পরও আপনার দল আপনাকে শপথ নিতে দেয় নাই। আপনার দল এমপিদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের পদত্যাগ করিয়েছে, কোনো লাভ হয় নাই। সুতরাং, আপনার দলের মূল নেতারা বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া চায় না আপনারা নির্বাচনে এসে ভালো ফল করুন কিম্বা এমপি হন।

তিনি বলেন, এটি আওয়ামী লীগ সরকার শেখ হাসিনার সরকার। কয়েকটা মানববন্ধন, নয়াপল্টনের সামনে বা কোথাও ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ জড়ো করে, সারাদেশ থেকে তাদের অগ্নিসন্ত্রাসীদের জড়ো করে কিছু গাড়িঘোড়া ভাঙচুর করে, আগুন দিয়ে এ সরকার হটানো সম্ভব না। ২০১৩-১৪ সালে অনেক চেষ্টা করেছিলেন। বহু গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়েছিলেন, শেখ হাসিনাকে হটাতে পারেননি। দেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ নির্বাচন করার জন্যে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, যেখানে দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে। আশা করব, বিএনপিও সেখানে অংশগ্রহণ করবে এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করবে। রাজপথে দাঁড়িয়ে সরকারকে হুংকার দেবেন না।

এর আগে শহীদ শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আমি পরম স্রষ্টার কাছে শহীদ শেখ রাসেলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সাথে সবশেষে ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়। তখন ১৩ থেকে ১৪ বছরের রমা, যিনি আজও বেঁচে আছেন, তাকে নিয়ে সিঁড়ির নিচে লুকিয়েছিল। সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে বঙ্গমাতার লাশের কাছে নিয়ে গিয়ে শেখ রাসেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অর্থাৎ, খুনিরা বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেত।

শেখ রাসেল যদি বেঁচে থাকতেন আজকে জাতীয় জীবনে অনেক কিছু দিতে পারতেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুকন্যার সহযাত্রী হতে পারতেন, কিন্তু খুনিরা তাকেও রেহাই দেয়নি’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কারবালার প্রান্তরে যখন ইমাম হোসেনকে জবাই করে হত্যা করা হয় তখন নারী ও শিশুদের সেই হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নারী ও শিশু নির্বিচারে এমন কি অন্তঃসত্ত্বা মাকেও হত্যা করা হয়েছিল। এটি মানব ইতিহাসে একটি জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। শুধু হত্যাকারীদের বিচার যথেষ্ট নয়। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে জিয়াউর রহমানসহ কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচিত হয়নি। সেই মুখোশ উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি কণ্ঠশিল্পী মো. রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী ড. অরূপ রতন চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট নেতা কণ্ঠশিল্পী এসডি রুবেল প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত