ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী

২৮ অক্টোবর রাজপথ থাকবে আওয়ামী লীগের দখলে

২৮ অক্টোবর রাজপথ থাকবে আওয়ামী লীগের দখলে

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বিএনপির মহাসমাবেশ, ছোট সমাবেশ, মাঝারি সমাবেশ এবং তাদের হাঁটা, দৌড় বা বসা কর্মসূচি, ভবিষ্যতে হয়তো হামাগুঁড়ি দেওয়া কর্মসূচি আসবে। এগুলোতে আমরা কখনো চাপ অনুভব করিনি। আমরা রাজপথের দল, আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব, ২৮ তারিখেও রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে ইনশাআল্লাহ।’ তিনি গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের গবেষণাপত্র ও গবেষণা গ্রন্থগুলো নিয়ে ‘স্বরব্যঞ্জন’ প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু সমগ্র’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

বিএনপির আগামী সমাবেশ নিয়ে কোনো চাপ অনুভূত হচ্ছে কি না সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ‘স্বরব্যঞ্জন’ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ড. শিহাব শাহরিয়ার মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।

বিএনপি মহাসচিবের ‘যে স্বপ্ন ও আশা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেটা আজ ধুলায় মিশে গেছে’ মন্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কি আসলে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন- এটি আমার প্রশ্ন। কারণ তিনি কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানই ভালো ছিল’। যিনি পাকিস্তান ভালো ছিল বলেছেন তিনি আসলে বাংলাদেশের জন্য স্বপ্ন দেখেছেন কি না, সেটি বিরাট একটা প্রশ্ন। আমি কারো বাবা নিয়ে কথা বলতে চাই না, কিন্তু তার বাবা পাকিস্তান সমর্থক একজন মানুষ ছিলেন, এটি দিবালোকের মতো সত্য। মির্জা ফখরুল সাহেব বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্নটাই দেখেননি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে যারা স্বপ্ন দেখেনি বরং পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিল সেইসব লোকজনের সন্নিবেশ ঘটিয়ে বিএনপি গঠিত হয়েছে। যে শাহ আজিজুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের ডেপুটি লিডার হিসেবে জাতিসংঘে গিয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তানে কোনো গণহত্যা হচ্ছে না, ভারতীয় চরেরা গ-গোল এবং বিশৃঙ্খলা করছে মাত্র’ এই বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাকেই জিয়াউর রহমান প্রথম প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন।’

‘অর্থাৎ যারা দেশটাই চায়নি তাদের সন্নিবেশ ঘটিয়ে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে বিএনপি গঠিত হয়েছিল’ উল্লেখ করে হাছান বলেন, ‘তার অর্থ মির্জা ফখরুলরা আসলে বাংলাদেশের কোনো স্বপ্ন দেখেননি। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমাদের পূর্বসূরি মুক্তিযোদ্ধারা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা, যারা দেশটা রচনা করে গেছেন, তাদের চেতনার বেদীমূলে আঘাত হেনেছিল জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি।’

বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় জিয়াউর রহমান ঠিকভাবে চিত্রিত হননি- বিএনপির এ মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘এটি বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে একটি বায়োপিক। বঙ্গবন্ধু কীভাবে খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা এই ছবিটিতে সেটিই উঠে এসেছে। এই ছবি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। বিদেশ থেকে আমি প্রতিদিন বহু ফোন ও এসএমএস পাই, কখন তারা ছবিটি দেখতে পাবে, কখন এটি আন্তর্জাতিকভাবে রিলিজ পাবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সিনেমাটি নিয়ে যখন মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া তখন স্বাভাবিকভাবেই বিএনপির একটু গাত্রদাহ হচ্ছে হয়তোবা। কারণ তাদের মূল নেতারা কথা না বললেও দুয়েকজন কথা বলেছেন, লিগ্যাল নোটিশও না কি দেওয়া হয়েছে। তবে যেগুলো ঐতিহাসিক সত্য সেগুলোই এখানে উঠে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিল এটা খুনিরাই দম্ভ করে যখন খুনের দায় স্বীকার করেছিল তখন তারা বলে গেছে, সেই রেকর্ড আছে, আপনারা দেখেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আছে। একযুগের বেশি সময় ধরে বিচারে খুনি এবং সাক্ষীরা সবাই জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে গেছে। মামলা শুরু হওয়ার আগে কর্নেল ফারুক রশীদ লন্ডনে একটি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে দম্ভভরে খুনের দায় স্বীকারের সময়ও জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন। ছবিতে সেই বিষয়টা পুরো আসেনি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যদি বলে থাকে যে, জিয়াউর রহমানকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি সেটি ‘টু সাম এক্সটেন্ট’ সঠিক। কারণ উনি যে পরিমাণে বঙ্গবন্ধুর খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ছবিতে এটা পুরো আসেনি।’

এর আগে ‘বঙ্গবন্ধু সমগ্র’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনকালে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই বইটি উঁচুমানের এবং এটি পড়লে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছু জানার সুযোগ সবারই হবে। সেজন্য আমি মনে করি এই উদ্যোগটা অনেক ভালো। এজন্য আমি লেখক ও প্রকাশককে ধন্যবাদ জানাই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক লেখা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মান রক্ষিত হয় না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যারাই লিখবেন বা লেখেন মানটা যাতে বজায় থাকে সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’ অনুষ্ঠানে ড. শিহাব শাহরিয়ার বইটির রূপরেখা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত