উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’

* সমুদ্র বন্দরসমূহে বিপদ সংকেত * পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুন কক্সবাজারের উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করা শুরু করে। এরফলে প্রবল বেগে বাতাস বইতে থাকে। উপকূলীয় এলাকায় তীব্র ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। গাছ-গাছালির ডালপালা উড়ে যাচ্ছে। কার্যত উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘুর্ণিঝড় ‘হামুন’। ঘুর্ণিঝড়ের তীব্রতায় প্রধান তিনটি বন্দরে দেয়া হয়েছে বিপদ সংকেত। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অফিস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো। সেই সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরাও। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আজ সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোলার পাশ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৭ নম্বর, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর এবং মোংলা সমূদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

গতকাল সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গতকাল সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোলার পাশ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে বলে বুলেটিনে জানানো হয়েছে।

পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারি বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আজ সকাল থেকে দুপুর নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তে এটির গতি বাড়লে এর আগেই অতিক্রম শুরু করতে পারে। সে কারণে আজ (গতকাল) রাত ৮টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১০ জেলার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী গতকাল সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১০ জেলার ১৫ লাখ লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।

‘ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্ব দিকে বরিশাল ও চট্টগ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। এর বাতাসের গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া দপ্তর ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়েছে বলে জানান এনামুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ও ধরন বিশ্লেষণ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এটি আজকে (গতকাল) রাত ১০টা থেকে কাল (আজ) সকাল ১০টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এজন্য রাত ৮টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আমরা প্রস্তুত করেছি।’

তিনি বলেন, এসওডি (দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী) অনুযায়ী ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মাঠ প্রশাসন ও আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করবে।’

আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক জেলায় ২০ লাখ টাকা, ৫০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গো ও শিশু খাদ্যের জন্য এক কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’

আজকে (গতকাল) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ে উপকূলীয় জেলাগুলোতে আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

হামুনের গতিপথ গতবছরের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মতো জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য আমরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছি। গবাদী পশুকেও আমরা সরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছি। মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রয়েছে।’

‘বরিশাল থেকে চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে এটি অতিক্রম করবে। এর কেন্দ্র বা চোখ বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে যাবে।’

‘হামুন’ মোকাবিলাকে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো এটিও আমরা মোকাবিলা করতে পারব।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরে এলার্ট-৩ জারি : ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বন্দরের সুরক্ষায় নিজস্ব ‘অ্যালার্ট-৩’ জারিসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এজন্য বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধসহ বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ জাহাজই বিকালের মধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়। গতকাল সকালে এ নিয়ে বন্দর ভবনে কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভা করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, আমরা সকালে সবাইকে নিয়ে একটি সভা করেছি। সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে যাতে বন্দর চ্যানেল, জাহাজ, হ্যান্ডলিং ইক্যুপইপমেন্ট, কার্গো ও কনটেইনারের ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের নিজস্ব সতর্কতা সংকেত ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদেরও।

তিনি আরো বলেন, বন্দর জেটিতে ২২টি জাহাজ অবস্থান করছিল। সবগুলোকে গভীরে সাগরে নিরাপদে অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু জাহাজ চলে গেছে। আর কিছু জাহাজ জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করছে। তারাও চলে যাবে।

সচিব জানান, বন্দরের মেরিন ডিপার্টমেন্ট নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশের সহায়তায় বন্দর চ্যানেল ও জেটি থেকে ছোট-বড় সব জাহাজ বহির্নোঙরে কিংবা শাহ আমানত সেতুর পূর্বপাশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বন্দরের নিজস্ব ছোট জাহাজ-নৌযানগুলো জেটিতে বাঁধা হয় শক্ত করে। কি গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি), রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি)সহ সব কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট পর্যায়ক্রমে প্যাকিং করা হয়। যাতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়। খালি কনটেইনারগুলো নিচে বা নিরাপদে রাখা হয়। বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ করে দেয়া হয়। জেটি, টার্মিনাল ও ইয়ার্ডে পূর্বনির্ধারিত ডেলিভারি কার্যক্রম চলছে সীমিতভাবে। পাইলটের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ কনট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

১০ জেলার মানুষকে রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার নির্দেশ : ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ আজ সকাল থেকে দুপুর নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তে এটি গতি বাড়ালে আগেই অতিক্রম শুরু করতে পারে। সে কারণে গতকাল রাত ৮টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১০ জেলার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। গতকাল সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

খুলনায় প্রস্তুত ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার : ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় খুলনায় প্রস্তুত রয়েছে ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার। এসব সাইক্লোন শেল্টারে ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। এছাড়া প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে। প্রস্তত রাখা হয়েছে শুকনো খাবার ও ওষুধ। প্রস্তত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড। খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান গতকাল সকালে অনলাইনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারে। এসব সাইক্লোন শেল্টারে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া তিনটি মুজিব কিল্লায় ৪৩০ জন মানুষ আশ্রয় ও ৫৬০টি গবাদি পশু রাখা যাবে। তিনি জানান, কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ জানান, বর্তমানে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের যে গতিপথ আছে তা পরিবর্তন না হলে আপাতত ঘূর্ণিঝড় খুলনা উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। তবে ঝড়ের প্রভাবে দমকা বাতাস, ভারি বৃষ্টি ও নদীতে পানির উচ্চতা বাড়তে পারে। গতকাল সকাল থেকে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন।