ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিএনপি বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়

বললেন ওবায়দুল কাদের
বিএনপি বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়। তাদের রাজনীতি হলো যে কোনো উপায় ক্ষমতা দখল করা। বর্তমানে সেটাই তারা প্র্যাকটিস করছে। জনগণের উপর দুঃশাসন চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের আখের গোছাতে চায়।

গতকাল বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলনে দুরভিসন্ধি আছে। তাদের ইতিহাস হলো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, ও স্বৈরশাসনের ইতিহাস। ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও হত্যা ধর্ষণের এবং দুর্নীতির ইতিহাস। বার বার বিশ্বে বাংলাদেশকে কালিমা লেপন করেছে। দুর্নীতি করে নিজের আখের গোছায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তি উন্নয়ন অগ্রগতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে একটি চিহ্নিত মহল সন্ত্রাস করার চেষ্টা করছে। গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে। বিএনপি জামায়তের নেতৃত্বে দেশি বিদেশি মহল আবারো দেশে নৈরাজ্য করতে চায়। আপনাদের মনে আছে, এরাই ২০১৩, ২০১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসংযোগ ও মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রধান অন্তরায়।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাই। এই অপশক্তিকে বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া

উচিত নয়। এই অপশক্তির চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হব। দেশ কি ৪৭ এর দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে চলবে নাকি মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার আদর্শে চলবে। সমাধান আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাই আমাদের আজকে লড়াই করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যকে বিচ্ছিন্ন দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনো বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে গোটা নির্বাচন নিয়ে চিন্তার সুযোগ নেই। একটা বিষয়ে একেকজন একেক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গী প্রকাশ করতে পারে। নির্বাচন হবে না, বা নির্বাচন নিয়ে তাদের ভিন্ন চিন্তা আছে, এমন তো বলেনি। অতএব, এই বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে, কোনো সংশয় কারণ নেই। আপনারা সাংবাদিকরা তো বাইরের কেউ না দেশেরই মানুষ, আপনারা দেখবেন।

শান্তি ও উন্নায়ন সমাবেশ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা শান্তি সমাবেশ করছি, আগামীকালও শান্তি সমাবেশ করব, আমরা অশান্তি করতে চাই না, আমরা সরকারে আছি, আমরা কেন অশান্তি করব? বিএনপি অশান্তি করতে চায়। মানুষের মধ্যে ২৮ তারিখ নিয়ে একটা উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে, আপনি কি মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি যে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কথা বলেছেন তারা যেন শান্তিটা বজায় রাখে। আমরা শান্তি চাই, নির্বাচনের আগেও শান্তি চাই, পরেও শান্তি চাই। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে আমরা দেখিয়ে দেব, অশান্তির জবাব শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। তাদের দুরভিসন্ধি আছে, সাম্প্রদায়িক আরো দুয়েকটা শক্তি নিয়ে তারা অশুভ খেলায় মেতে উঠতে পারে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকেও ভুয়া একটা প্রেসলিস্ট ছেড়েছে, ফখরুল সাহেবের সব খেলা ধরে ফেলি। কী করবে, টেমস নদীর পাড় থেকে ধমক খায়। মাঝে মাঝে নার্ভাস দেখা যায়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা মরতে হলেও মরব তবুও মাঠ ছাড়ব না। এটা বাংলাদেশের আরেক মুক্তিযুদ্ধ। এটাতে জিততে পারব যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে দেব না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দিব না।

বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, বিএনপির কর্মী হত্যা মামলায় খোকন গ্রেফতার। অথচ অভিযোগ করছে, রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার। তাহলে কি আপনাদের কর্মী হত্যার বিচার হবে না? এ ক্ষেত্রে সরকার তো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেয়নি। আপনি তো টেনেটুনে ২২ জনের নাম বলেছেন। আর আপনারা আমাদের ২২ হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছেন। আমরা ভুলিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মো. ফারুক খান, শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত