ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুপ্রিমকোর্ট বার

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা বিচার বিভাগের ওপর আঘাত

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা বিচার বিভাগের ওপর আঘাত

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিমকোর্ট বার) কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা বলেছেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা দেশের বিভাগের ওপর আঘাত।

ওই ঘটনায় গতকাল প্রতিবাদ সভা করেছে সুপ্রিমকোর্ট বার। সমিতির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করেন সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য সিনিয়র অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিমকোর্ট বারের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল নূর দুলাল, সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী ও শেখ মেহাম্মদ মোরশেদ, আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া, আবদুল আলিম মিয়া জুয়েল, শেখ আওসাফুর রহমান বুলু, সুপ্রিমকোর্ট বারের সহ-সভাপতি মো. আলী আজম ও জেসমিন সুলতানা, কোষাধ্যক্ষ এম. মাসুদ আলম চৌধুরী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, বারের সাবেক সহ-সম্পাদক মোতাহার হোসেন সাজু ও ইমতিয়াজ ফারুক।

প্রতিবাদ সভা সঞ্চালনা করেন সুপ্রিমকোর্ট বারের সহ-সম্পাদক এবিএম নূরে আলম উজ্জ্বল ও এম হারুন-উর রশিদ। মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, একাত্তরে প্রথমে রাজারবাগে হামলা হয়েছিল। সে পরাজিত শক্তি প্রধান বিচারপতির বাসভবন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠান। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা সমগ্র বিচার বিভাগের ওপর হামলা।

তিনি বলেন, কোন ষড়যন্ত্রই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে। দেশি-বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্রই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, প্রধান বিচারপতি ব্যক্তি নন একটি প্রতিষ্ঠান। সে প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত মানে বিচার বিভাগের ওপর আঘাত। সংবিধানের ওপর আঘাত।

তিনি বলেন, রাজারবাগ হাসপাতালে হামলার এ ঘটনা ফিলিস্তিনের গাজায় হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার অনুরূপ। সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানান তিনি। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গত শনিবার একজন নিরীহ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে তার মরদেহে আগুন দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি ঘৃণ্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। হামলাকারীদের আদিপুরুষ জিয়াউর রহমানের অবৈধ ক্ষমতাকে অবৈধ ঘোষণা করেন সুপ্রিমকোর্ট। সেজন্যই বিচার বিভাগের ওপর হামলা। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। মানবতাবিরোধী এসব অপরাধে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগামী নির্বাচনে জনগণ এসব অপকর্মের জবাব দিবে বলে বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সুপ্রিমকোর্ট বার সম্পাদক আবদুল নূর দুলাল বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও হাসপাতালে হামলা দেশে নজিরবিহীন। গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলারও নিন্দা জানান বার সম্পাদক। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে সুপ্রিমকোর্ট বার সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেবে।

সভায় আইনজীবী নেতারা বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি এখন দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অশান্তি সৃষ্টি করছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন ব্যক্তিগত নয়, একটি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। এটি একটি স্পর্শকাতর স্থান। এই হামলা স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর হামলা। বক্তারা বলেন, বিচার বিভাগ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নজির স্থাপন করে এখন জনগণের আস্থা ও ভরসাস্থল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলা, একাত্তরে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে। এসব অর্জনের বিরুদ্ধে একাত্তরে পরাজিত শক্তির দোসররা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ও বিভিন্ন স্থাপনায়া হিংসাত্মক হামলা পরিচালনা করেছে। বক্তারা হামলাকারী ও তাদের নির্দেশদাতা এবং পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। প্রতিবাদ সভা শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন সুপ্রিমকোর্ট বার নেতাদের নেতৃত্বে আইনজীবীরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত