সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের

বিএনপিকে সহিংসতা পরিহারের আহ্বান

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্র চাইলে এবং ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য সহিংসতার পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

গতকাল ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সহিংসতার পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আসুন। যদি গণতন্ত্র চান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিকল্প নেই। ক্ষমতা পরিবর্তনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। সুষ্ঠু অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। যদি কেউ মনে করে সহিংসতা করে অপকর্ম করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভ-ুল করবেন, সেটা আপনাদের করতে দেয়া হবে না।

দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিএনপি-জামায়াত তাদের চিরাচরিত রূপে নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, তাদের তথাকথিত সমাবেশের নামে জনমনে যে আতঙ্ক ছিল, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তা আজ সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় বলে এ ধরনের বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। গত শনিবারে নৃশংস হামলা চালিয়ে নিষ্ঠুরভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে। এগুলো ছিল তারক রহমানের ট্যাগ ব্যাক।

বিএনপির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবেই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। কানাডার ফেডারেল আদালতে এই পর্যন্ত ছয়বার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে রায় দিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ভ-ুল করতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দৃষ্টতা দেখিয়েছে, চেলেঞ্জ করেছে। গণমাধ্যমকে রুদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানোর মধ্যদিয়ে সমগ্র রাষ্ট্রকে জিম্মি করে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তিনি বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা বলে, আসলে তারা তাদের রাজনীতির সন্ত্রাসী ধানা, সেই ধারা বাস্তবায়নের জন্য গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের ভয়ঙ্কর রাজনীতির পুরোনো চেহারা ফিরে আসার সময় নিচ্ছিল, সময়মতো তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ বেছে নিয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা মানে তাকে অবঙ্গা ও অপমান করা। সমগ্র জাতিকে জিম্মি করে যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল তাদের উদ্দেশ্য। গত শনিবারের বিএনপির সহিংসতাকে ক্যাপিটাল হিলের সঙ্গে তুলনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকালে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল হিল দখলের আগ্রাসীকে তুলনা করা যায়। আন্দোলনের নামে তারা সবই করেছে। ৩০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে, গতকালে ঘটনা দেখে শুনে সত্যটা তারা লিখতে গিয়ে তারাও রোষানলে পড়েছে। একজন পুলিককে হত্যা করে লাশের ওপর আবারো হামলা করেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে কুষ্ঠাগত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। বিএনপি সন্ত্রাসীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেক কমপ্লেক্সে হামলা রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার মতো নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। হাসপাতালে প্রবেশ করে রোগীদের ওপর হামলা গাজায় ইসরাইলিদের হামলার ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। পুলিশ হত্যাকে পরিকল্পিত দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গতকালকে পুলিশকে হত্যা করা তাদের ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত খুনের ঘটনা। বিএনপির সন্ত্রাসীরা পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, অন্ধকারের পথ বেছে নিয়েছে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি থাকবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা গায়ে পরে কারো সঙ্গে লাগতে যাব না, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এখন তারা আমাদের ওপর হামলা করলে উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেব। সবাই সতর্ক অবস্থানে থাকব। এই পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধীদের সঙ্গে কোনো সংলাপে আসবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা পথরুদ্ধ করে দিয়েছে, আর তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন নেই। আমরা আগবাড়িয়ে সংলাপের দিকে কোনো কথা বলব না। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাহজাহান খান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।