ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তারেকের নেতৃত্বে চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠন

বিএনপির সাথে আলোচনার প্রশ্নই আসে না : তথ্যমন্ত্রী

বিএনপির সাথে আলোচনার প্রশ্নই আসে না : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সাথে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।

তিনি গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু ৭ম খন্ড’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রাজনৈতিক সংলাপ বিষয়ে প্রশ্নে এ কথা বলেন। পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং কর্মকর্তা ও গবেষকরা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এখন আর রাজনৈতিক দলে নাই, বিএনপি এখন সন্ত্রাসীদের দলে। যারা রাষ্ট্রের বেদিমূলে আঘাত হানে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যারা হামলা চালায়, অর্থাৎ বিচারব্যবস্থার ওপর হামলা চালায়, যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয়, ভাঙচুর করে, যারা পুলিশ হত্যা করে, তারা কখনো রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তাই বিএনপি এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সাথে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।’ একইসাথে তিনি বলেন, আলোচনা হবে অবশ্যই। আওয়ামী লীগ যে কারো সাথে আলোচনা করতে পারে রাজনৈতিক দল হিসেবে। যারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে, যারা দেশের সংবিধান মানে, আইন ব্যবস্থাকে মানে, বিচার ব্যবস্থাকে মানে তাদের সাথে আলোচনা হবে। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৮ অক্টোবর বিএনপি সারাদেশে হরতাল ডেকে সেই হরতালকে সফল করার জন্য সেই আগের পুরোনো ঘৃণ্য আগুন সন্ত্রাসের তাণ্ডবে ফিরে গেছে। আপনাদের মনে আছে, ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে কীভাবে গাড়ি চালকদের হত্যা করা হয়েছে। গত শনিবার দিবাগত রাতেও সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর ডেমরায় একটি বাস যেটি দাঁড়িয়েছিল, বাসের হেলপার ঘুমাচ্ছিল, সেই বাসে তারা আগুন দিয়েছে। সে আগুনে বাস পুড়ে গেছে, হেলপারও পুড়ে গেছে। বিএনপির আবার সেই জঘন্য নৃশংসতা।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২৮ অক্টোবর সারাদেশে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলাম। ঢাকা শহরে কমপক্ষে দেড় দুই লাখ মানুষের সমাবেশ হয়েছে আমাদের, সবাই আমাদের নেতাকর্মী। এত উসকানির মধ্যেও আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো উসকানিতে পা দেয়নি। বরং তারা আমাদের মহিলাকর্মী থেকে শুরু করে অনেককে মারধর করেছে, মহিলাদের কাপড় ধরে টানাটানি করেছে। এবং তারা দেড় কিলোমিটার দূরে এত তাণ্ডব চালালেও আমাদের নেতাকর্মীরা কিন্তু সেখানে যায়নি। আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, রেখেছিলাম।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘লালমনিরহাটে আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ করছিল, সেখানে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে একজন শ্রমিক লীগ কর্মীকে কুপিয়ে তারা হত্যা করেছে। আবার ঢাকায় মোহাম্মদপুর বাসে আগুন দিতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপির কর্মী একটি বিল্ডিংয়ে উঠে সেখান থেকে লাফ দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ, একজন দুষ্কৃতিকারী মারা গেছে, আর বিএনপির ভাষায় ‘শহীদ’ হয়েছে। এই হচ্ছে বিএনপি।’ আজ থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ নিয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা স্পষ্টত এই নৈরাজ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই তিন দিনের অবরোধ ডেকেছে। তাদের উদ্দেশ্য অবরোধ করা নয়, তারা জানে তাদের পক্ষে দেশে অবরোধ কার্যকর করা সম্ভবপর নয়। কিন্তু চোরাগোপ্তা হামলা, নৈরাজ্য সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তারা অবরোধ ডেকেছে। মানুষ চোর-ডাকাত ধরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। আর যারা মানুষের ও সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেবে, ধ্বংস করবে তারা চোর-ডাকাতের চেয়েও খারাপ। সুতরাং, তাদের বিরুদ্ধেও জনগণ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

বিএনপি ‘ভার্চুয়ালি’ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতারা কতটুকু ভীতু। ২৮ তারিখ কর্মীরা যাওয়ার আগে নেতারা পালিয়ে গেছে। নেতারা পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে কর্মীরাও পালিয়ে গেছে। আমরা সারা জীবন বিরোধী দলের কর্মী ছিলাম। আমরা রক্তাক্ত হয়েছি, কিন্তু আমরা পালিয়ে যাইনি কখনো। বিএনপি নেতারা সামনে আসতেই ভয় পায়, সেজন্য তারা ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতার নিন্দা জানানো প্রসঙ্গে প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি তাদের এই নিন্দা সহিংসতা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই সহিংসতার প্রেক্ষিতে তারা ভিসা নীতি নিয়েও ভাববে। আমরা আশা করবো, যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, পুলিশ হত্যা করেছে, পুলিশ আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে, জনগণের সম্পত্তি পুড়িয়েছে, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সেই ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করবে, আমরা দেখার অপেক্ষায় আছি।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং বিদেশি চিকিৎসকরা ফিরে গেছেন এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলছিল যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি, তাকে রক্ষা করা যাবে না। আমেরিকান চিকিৎসকরা এসে এখন বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি আগের তুলনায় ভালো আছেন। এজন্য আমিও স্বস্তি প্রকাশ করছি এবং প্রার্থনা করি তিনি যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন। মার্কিন চিকিৎসকদের আসার ব্যবস্থা সরকারই করে দিয়েছে। বিএনপির বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, তারা খালেদা জিয়াকে রাজনীতির গুটি বানিয়েছে এবং তার স্বাস্থ্যকে নিয়ে রাজনীতিটাই করে, মিথ্যাচার করে, আসলে স্বাস্থ্য ভালো করার চেষ্টাটা করে না।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত