ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আখাউড়া-আগরতলা ও খুলনা-মোংলা রেলপ্রকল্প

আজ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি

আজ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি

বাংলাদেশের আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলা পর্যন্ত একটি আন্তঃসীমান্ত ডুয়েলগেজ রেল প্রকল্প উদ্বোধন করা হচ্ছে আজ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকাল ১১টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে যৌথভাবে প্রকল্প দুটি উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এর আগে গত সোমবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ হয়ে প্রথমবারের মতো আখাউড়া গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে দুইজন চালকসহ ছয়জন কর্মকর্তা নিয়ে বাংলাদেশের একটি পণ্যবাহী ট্রেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার নিশ্চিন্তপুরে পৌঁছায়। এর মধ্য দিয়ে এই রেলপথটি চূড়ান্তভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী বলে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

এই রেলপথে একটি বড় এবং তিনটি ছোট সেতুও অন্তর্ভুক্ত। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলসংযোগ আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যকে উৎসাহিত করবে। সেইসঙ্গে ঢাকা হয়ে আগরতলা ও কলকাতার মধ্যে ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। বর্তমানে ট্রেনে আগরতলা থেকে কলকাতা পৌঁছাতে প্রায় ৩১ ঘণ্টা সময় লাগে। প্রকল্পটি চালু হলে তা কমে মাত্র ১০ ঘণ্টা হয়ে যাবে। উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। এই রেলপথে ৭৯ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে যেহেতু বাঁক বেশি তাই হয়তো সম্পূর্ণ গতিতে ট্রেন চালানো হবে না। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই রেলপথের বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। এদিকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা-মংলা রুটে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে যুক্ত হবে ভারত, নেপাল ও ভুটান। পাশাপাশি গতিশীল হবে মংলা বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য।

সোমবার বিকালে ফুলতলা স্টেশন থেকে মংলা বন্দরের উদ্দেশে ট্রেন যাত্রা শুরু হয়। পদ্মা সেতু চালুর পর দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হলো খুলনা-মংলা রেললাইনের নির্মাণকাজ। সোমবার বিকালে এই পথে পরীক্ষামূলক চলাচল করে। এদিন বিকাল ৪টায় ফুলতলা স্টেশন থেকে মংলা বন্দরের উদ্দেশে ট্রেন যাত্রা শুরু হয়। ট্রেনটি সন্ধ্যা ৭টায় মংলা বন্দরে পৌঁছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত হলো আরেকটি মাইলফলক। ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় মংলা বন্দর যেমন আরো গতিশীল হবে, তেমনি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি পাবে।

ব্যবসায়ী ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষজন বলছেন, খুলনার সঙ্গে রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ায় বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যাবে। এতে প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটান রেলপথ দিয়ে সহজেই মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। আগে সড়ক ও নদীপথে এই বন্দরের পণ্য পরিবহণ হতো। রেলপথে পণ্য পরিবহণে খরচ কম, এর সুবিধা পণ্যের ওপর যোগ হবে। এই মানুষের জীবনযাত্রায় গতি আসবে। খুলনার ফুলতলা থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত নির্মিত নতুন রেললাইনে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল করেছে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, বন্দরের পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে সড়কপথের পাশাপাশি রেল যোগাযোগ জরুরি ছিল। কিন্তু মংলা বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ না থাকায় যাতায়াত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় মংলা বন্দরকে আরো গতিশীল করতে রেল যোগাযোগ স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। অবশেষে খুলনা-মংলা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলো। খুলনা-মংলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক জানান ‘খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। এই রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটি টাকা। রেললাইনের কাজ শেষ। তবে প্রকল্পের কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত