ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় : মোদি

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় : মোদি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমাগত নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমনকি গত ৯ বছরে উভয় দেশ একসঙ্গে যে কাজ করেছে, তা আগের কয়েক দশকেও হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

গতকাল আখাউড়া-আগরতলা রেলপথসহ ৩ প্রকল্প উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে মোদি এসব কথা বলেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই। বার্তাসংস্থাটি বলছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় ভারতীয় এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আনন্দের বিষয় যে আমরা আবারো ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতার সাফল্য উদযাপন করতে সংযুক্ত হয়েছি। আমাদের সম্পর্ক ক্রমাগত নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে। গত ৯ বছরে আমরা একসঙ্গে যে কাজ করেছি, তা আগের কয়েক দশকেও করা হয়নি।’ নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘সীমান্তে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এটি কয়েক দশক ধরে ঝুলে ছিল। আমরা সমুদ্রসীমার বিরোধও সমাধান করেছি... গত ৯ বছরে তিনটি নতুন বাস পরিষেবা চালুর মাধ্যমে ঢাকা, শিলং, আগরতলা, গুয়াহাটি এবং কলকাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে...।’

ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘গত ৯ বছরে তিনটি নতুন ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে পার্সেল এবং কন্টেইনার ট্রেনগুলোও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলছে... গঙ্গা বিলাস নামে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী চালু করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটনও চাঙ্গা করা হয়েছে...।’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘গত ৯ বছরে আমাদের (বাংলাদেশ ও ভারতের) অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য তিনগুণ বেড়েছে... আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের উদ্বোধন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত... এটি বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম রেল সংযোগ।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলোর সময় থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার দৃঢ় বন্ধন রয়েছে... আমি আনন্দিত যে, আমরা মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটও উদ্বোধন করেছি...।’গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আখাউড়া-আগরতলা রেলপথসহ তিনটি প্রকল্প ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর নয়াদিল্লি থেকে যুক্ত হন নরেন্দ্র মোদি। প্রকল্প তিনটি হলো- আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ, খুলনা-মংলা বন্দর রেললাইন এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিট। নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘আমরা যে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ (সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সবার উন্নয়ন) নীতিতে বিশ্বাস করি, এটি আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের জন্যও বিবেচনা করি। আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে গর্বিত। গত ৯ বছরে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য প্রদান করা হয়েছে।’ মোদি বলেন, ‘আমাদের অর্জনের তালিকা অনেক দীর্ঘ... আজ (গতকাল) যে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে আমরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আজ সেগুলো উদ্বোধন করার সুযোগও পেয়েছি। আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার সাফল্যের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ এসব প্রকল্পের উদ্বোধনের আগে মঙ্গলবার ভারত সরকার জানায়, এই প্রকল্পগুলো ভারতের সহায়তার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে, যা এই অঞ্চলে সংযোগ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করবে। আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ প্রকল্পটি ভারত সরকারের ৩৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকার অনুদান সহায়তার আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে। রেলপথটি চালুর ফলে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। জানা গেছে, উদ্বোধনের পর প্রথমদিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরবর্তী সময়ে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে। খুলনা-মংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পটি ভারত সরকারের ছাড়ের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ৩৮৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মংলা ব্রডগেজ রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভারতীয় ঋণ সহায়তার আওতায় বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের রামপালে অবস্থিত একটি ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত