ইসির আজকের সংলাপে যাচ্ছে না বিএনপি

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আমিরুল ইসলাম অমর

নিবন্ধিত ৪৪ দলের সঙ্গে আজ সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগেও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে ইসি। তখন বিএনপিসহ ৮টি দল নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি। এবারও আগের মতো ইসির সংলাপ বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এই সংলাপকে প্রহসন ও হাস্যকর হিসেবে উল্লেখ করে দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, সরকার যেখানে মহাসচিবসহ দলের সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করছে; সেখানে ইসি সংলাপের জন্য ডাকছে। এটা লোক দেখানো ছাড়া কিছু নয়। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সকাল ও বিকালে ২২টি করে মোট ৪৪টি দলের সঙ্গে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। বিএনপিকে সময় দেওয়া হয়েছে আজ বিকাল ৩টায়।

অন্য দলের পাশাপাশি বিএনপিকেও আলোচনায় অংশ নিতে চিঠি দিয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। এর আগেও আলোচনা বসতে স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ডিও লেটারও (আধা সরকারি পত্র) পাঠিয়েছেন। তবু ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি বিএনপি। বরং ইসির পুনর্গঠন চেয়েছে তারা। এদিকে, ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্বাচন কমিশন যে চিঠি পাঠিয়েছিল তা বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবন্ধ থাকায় তা কলাপসিবল গেটের ভেতরে চেয়ারে রেখে গিয়েছেন ইসি কর্মকর্তা। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা মো. মহসিন ওই চিঠি নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। কিন্তু বাইরে সতর্ক পাহারায় থাকা পুলিশ সদস্য তাকে থামিয়ে বলেন, অফিস বন্ধ, ভেতরে কেউ নেই। পরে ইসি কর্মকর্তা কার্যালয়ের পাশে হোটেল ভিক্টোরিয়াতে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি টেলিফোনে বিএনপি’র অফিস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ইসি’র এই কর্মকর্তা নয়াপল্টনে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি চিঠি নিয়ে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যাবেন। পরে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে মো. মহসিন আবারো চিঠি নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কার্যালয়ে আসেন। এ সময় পথচারী নাজিমকে (পিতা-শামসুল হক, গ্রাম-কুসুমবাগ, থানা- চরফ্যাশন, জেলা ভোলা) সাক্ষী রেখে কার্যালয়ের গেটের ভেতরে চেয়ারের উপর চিঠিটি রেখে যান।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদপূর্তির কারণে আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের মূল অংশীজন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পূর্ব প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে ৪ নভেম্বর এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।’ চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং নির্বাচন কমিশনাররা সভায় উপস্থিত থাকবেন। ওই সভায় আপনার দলের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা আপনাদের মনোনীত দুইজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন অনুরোধ জানিয়েছেন।’

এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কিসের সংলাপ। যেখানে আমাদের সিনিয়র সব নেতা গ্রেপ্তার হচ্ছেন সেখানে সংলাপ নিয়ে ভাবার সময় নেই। এগুলো সরকারের সাজানো পরিকল্পনা। যা বাস্তবায়ন করছে ইসি। সংলাপ হতে হবে নির্দলীয় সরকারের ইস্যুতে। সরকারের পদত্যাগের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কোনো সংলাপে যাবে না বিএনপি।