আগুন সন্ত্রাসীদের গর্ত থেকে বের করে শায়েস্তা করা হবে : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা আগুন সন্ত্রাস চালাচ্ছে, পুলিশ হত্যা করেছে, ইসরাইলি বাহিনীর অনুকরণে হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, আমাদের মা-বোনদের কাপড় ধরে টানাটানি করেছে, আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে এখন যারা গর্তে ঢুকেছে, তাদের গর্ত থেকে বের করে এনে শায়েস্তা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ২৮ তারিখ ফাইনাল খেলা হবে, কিন্তু তারা খেলার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেছে। পুলিশ একটা গুলিও ছোঁড়ে নাই, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজেই মির্জা ফখরুল সাহেবসহ সবাই মঞ্চ ছেড়ে চলে গেল, আর নেতাকর্মীরাও পেছনে পেছনে চলে গেল। অর্থাৎ খেলা শুরু হওয়ার আগেই মাঠ ছেড়ে চলে গেল বিএনপি।

গতকাল সন্ধ্যায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামের একটি কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই স্মরণ সভার আয়োজন করে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু’র সন্তান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদিকা ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির-জামায়াত জোট নেতারা এখন জনশত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে, তারা গাড়িতে আগুন দেয়, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে। ডাকাত ডাকাতি করে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে না। চোর চুরি করে, সে মানুষের বাড়িতে আগুন দেয় না। আর এরা মানুষের সহায় সম্পত্তিতে আগুন দিচ্ছে। এরা জঘন্য ডাকাত এবং জঘন্য সন্ত্রাসীর চেয়েও এরা বেশি জঘন্য।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, গাড়িচালক ভাইদের অনুরোধ জানাব, গাড়িতে আত্মরক্ষার্থে কোনো দুষ্কৃতকারী আক্রমণ করলে সেই দুষ্কৃতকারীকে শায়েস্তা করবেন। আক্রান্ত হলে আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে আইনেও বাধা নেই। এই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি ভেবেছিল কেউ কোলে করে শিশুদের মতো ফিডার খাওয়াতে খাওয়াতে ক্ষমতার দোলনায় বসিয়ে দিবে। সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজে যারা পালিয়ে যায়, তাদের সঙ্গে কেউ থাকে না। সুতরাং তারা কাউকে পাবে না।

আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি নিশ্চিত করা সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। সেজন্য জনগণের পাশে থাকতে হবে। পাড়া-মহল্লায় দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাসে আগুন দিতে যদি কেউ উদ্যত হয়, তাদের ধরে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত এ গণশত্রু ও দুষ্কৃতকারীরা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাবে। কারণে তারা নির্বাচনকে ভ-ুল করতে চায়। আমরা চাই, তারা এই পথ পরিহার করে নির্বাচনে এসে তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক। কিন্তু বিএনপির তারা জনগণকে ভয় পায়। তাই ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের মতো জনগণের ওপর এখন পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ শুরু করেছে, মসজিদেও আগুন দিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ি ও বিচারপতিদের কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়েছে।

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সব রক্তচক্ষুর মধ্যেও কখনো ক্ষমতার সঙ্গে আপস করেননি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, তার জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে হবে কারণ, রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত, রাজনীতি ক্ষমতায় যাওয়া, বিত্ত-বৈভব ও খ্যাতি অর্জনের সোপান হওয়া উচিত নয়।

চট্টগ্রাম ৭ আসনের এমপি হাছান বলেন, আমি আখতারুজ্জামান বাবু ভাইকে কাছ থেকে দেখেছি, কেউ তার কাছে গেছে কাউকে না বলতে শুনিনি। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ছিলেন, সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী ছিলেন এবং একজন বড় দানশীল ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অটল থেকে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, কারাগারে গেছেন, ঝুঁকি নিয়ে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রয়াত আখতারুজ্জমান চৌধুরী বাবু সম্পর্কে তার সন্তান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, তিনি একজন আদর্শবান রাজনীতিবিদ ছিলেন, কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। কর্মগুণে তিনি মরেও আমাদের মাঝে অমর হয়ে আছেন। তার জীবনের প্রতিটি কর্ম আজও চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।